বরিশালে করোনা ভ্যাকসিন প্রদান বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত
আমেরিকা-ইউরোপে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়েছে। আমরাও কিন্তু শুরু করেছি। কল্পনাও করিনি সমৃদ্ধ দেশের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের জনগোষ্ঠিকে একসাথে স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারবো। এটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য। আজ শনিবার (১৬ জানুয়ারী) দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রমে গঠিত জেলা কমিটির উপদেষ্টা কর্নেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামীম এমপি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের কথা চিন্তা করেন বলেই দশ বছরে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নিত হয়েছি। ২০৩১ সালে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালে আমরা সমৃদ্ধশালী দেশে পরিনত হওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনার হাত থেকে জনগণকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রী কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন, যে করেই হোকে প্রথম দফায়ই ভ্যাকসিন আনতে হবে। কে বেশি দাম রাখলো আর কে রাখলো না তা দেখার দরকার নেই। এজন্যই কিন্তু আমরা আগেই টাকা পাঠিয়ে দিয়েছি করোনার ভ্যাকসিনের জন্য। তার দিকনির্দেশনার কারনে প্রথম পর্যায়েই ভ্যাকসিন পাচ্ছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে বাংলাদেশের জনগন প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করলে আল্লাহ অখুশী হবেন।
জাহিদ ফারুক আরো বলেন, বরিশালে করোনা ভ্যাকসিন প্রদানে যেসব স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ গ্রহন করবেন তারা যেন দায়িত্ববান ও কাজের প্রতি আন্তুরিক হন এমন লোক বাছাই করবেন।
তিনি আরো বলেন, আমি দেখেছি বরিশালে করোনা সংক্রমণের শুরুতে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের অনেক ডাক্তার রোগীদের সেবা দেননি। তারা ভয় পেয়েছেন। এমনও শুনেছি হাসপাতালের কর্মচারীরা রোগীদের কাছে খাবার পৌঁছে দেয়নি। গেটের বাইরে খাবার রেখে আসতো। আবার এমন ডাক্তারও দেখেছি যারা দিনরাত কাজ করেছেন। সুতরাং জনগণের অধিকার রক্ষায় দায়িত্ববান মানুষ পছন্দ করতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আমরা ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু করতে পারবো। ভ্যাকসিন যারা প্রদান করবেন সেইসমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ চলমান রয়েছে। জেলায় সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে।
জাহিদ ফারুক বলেন, আমি স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতি অনুরোধ রাখবো ভ্যাকসিন দেওয়ার সময়ে যেন বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনার ভ্যাকসিন গ্রহনে উদ্বুদ্ধ করতে প্রচারণার দরকার আছে। বিশ্বের বড় বড় দেশের রাষ্ট্রপতিরা ভ্যাকসিন নিয়ে জনগনকে উদ্বুদ্ধ করছেন। সেজন্য সংবাদমাধ্যমের সহায়তা করতে হবে। সারাবিশ্বে করোনা ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে। এনিয়ে ভয়ের কিছু নেই। এবিষয়ে গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীল ভুমিকা রাখতে হবে।”
এসময় করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে নেগেটিভ সংবাদ না করার অনুরোধ করেন প্রতিমন্ত্রী।
জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করে বলেন, প্রথম ধাপে বরিশাল জেলার জন্য ৫০ হাজার ভ্যাকসিনের চাহিদা পাঠানো হয়েছে মন্ত্রনালয়ে। সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ৬ লাখ ভ্যাকসিন এবং উপজেলা পর্যায়ে ১ থেকে ২ লাখ ভ্যাকসিন সংরক্ষন করা যাবে। একই সাথে ভ্যাকসিন প্রদানের জন্য সংশ্লিস্টদের প্রশিক্ষন কার্যক্রমও চলমান রয়েছে বলে জেলা প্রশাসক বলেন।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন উপ-পরিচালক স্থানীয় সরকার বরিশাল শহিদুল ইসলাম, সিভিল সার্জন ডাঃ মনোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রাজিব আহমেদ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুনিবুর রহমান, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডাঃ মুঃ জসিম উদ্দিন প্রমূখ।