সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৪২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট
বরিশালের নতুন জেলা প্রশাসক খায়রুল আলম সুমন বরিশালের নতুন বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান র‌্যাঙ্কিংয়ে এগোতে ক্যারিবীয় সিরিজে বাংলাদেশকে যা করতে হবে জুলাই সনদ স্বাক্ষরের আগে ভাঙচুর-আগুন, ৯০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা ‘জুলাই সনদে স্বাক্ষরকারীরা গণঅভ্যুত্থান ও জনগণ থেকে ছিটকে গেছে’ জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন যেসব নেতা জুলাই সনদ স্বাক্ষর করলেন প্রধান উপদেষ্টা ও রাজনৈতিক নেতারা জুলাই সনদের দিকনির্দেশনা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকে পরিচালনা করবে : আলী রীয়াজ গণঅভ্যুত্থানের ফসল ‘জুলাই সনদ’, নবজন্মের পথে বাংলাদেশ : ড. ইউনূস ক্যান্সার দূরে রাখার ৬ উপায়

দুর্নীতির টাকায় বরিশালে ইনফ্রা’র পরিচালক আমির হোসেন কোটিপতি,হুমকির মুখে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ

রিপোর্টারের নাম / ১৮০ টাইম ভিউ
হালনাগাদ : বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২১

বরিশাল প্রতিনিধি : বরিশালে ইনফ্রা পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমির হোসেনের দুর্নীতি ও একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের প্রভাবে হুমকির মুখে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটির তিন হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার মালিক ও অধ্যক্ষকে কোনঠাসা করে শিক্ষকদের কম বেতনে নিয়োগ ও প্রকৃত খরচের চেয়ে ভাউচারে বেশি দেখানো এবং ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে ভর্তি ফি ও সেশন ফির নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে চলছেন। এভাবে করে দেড় যুগে প্রায় শত কোটি টার মালিক হয়েছেন আমির হোসেন। এছাড়াও ইনফ্রা পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউটটি নিজস্ব সম্পত্তিতে স্থাপিত দেখালেও জমি ব্যক্তি আমির হোসেনের নামে দলিল করে ভাড়া দেখানো হচ্ছে একাডেমিক ভবনকে।

সেখান থেকে ভাড়া বাবদ প্রতিমাসে আত্মসাদ করা হয় লাখ লাখ টাকা। তার এই নানান কিসিমের ধান্ধায় প্রতিষ্ঠানটি দেউলিয়ার পথে থাকলেও আমির হোসেন ও তার স্ত্রী ফুলে ফেঁপে ধনকুবে পরিনত হয়েছেন। বরিশাল শহরের কাশিপুর,হাতেম আলী চৌমাথা,কাশিপুর চৌমাথাসহ বেশ কয়েকটি স্থানে আমির হোসেন ও তার স্ত্রী নামে প্রায় ৫টি বহুতল ভবন,২০টি ছোট বড় প্লটসহ একাদিক ব্যাংকে নগদ অর্থ মিলিয়ে প্রায় শত কোটি টাকার মালিক হয়ে বিলাসী জীবন যাপন করছেন। যার দরুন, ইনফ্রা পলিটেকনিকের ভেতরকার শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে । সর্বশেষ তিন বছরে ইনফ্রা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ক্রমাগত খারাপ ফলাফল তার প্রমান দিচ্ছে।

ওই একই কারনে বেশ কয়েক বছর আগে যেখানে প্রতি বছর এ প্রতিষ্টানটিতে ৫ হাজারের ওপরে শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও বর্তমান এ দুই হাজার ছাত্রছাত্রীও বিদ্যমান নেই। এখন অনেকটা সার্টিফিকেট কেনা বেচার মতো প্রতিষ্ঠানের পরিনত হয়েছে ইনফ্রা পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউটি। প্রতিষ্ঠানের ভেতরকার এই চাপা ক্ষোভের বিস্ফোরন ঘটেছে করোনাকালীন লকডাউন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতা না দেওয়ায়। উপায়ন্ত না পেয়ে সময় আন্দোলনে নামতে পারেন বলে আভাস দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার মালিক ও শিক্ষক-কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিশাল একটি অংশ। ছাত্র শিক্ষক সবারই দাবি সরকার থেকে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে হলেও প্রতিষ্ঠানটি সুষ্টু ভাবে পরিচালনা করে দেউলিয়ার হাত থেকে মুক্ত করা হোক। নিশ্চিত করা হোক ছাত্র ছাত্রীদের শিক্ষা জীবন । এরসাথে আমির হোসেনের সম্পদের বৈধতা কি তা দুদকের মাধ্যমে তদন্ত করার আবেদন করা হতে পারে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে নিশ্চিত করেছে।

পক্ষান্তরে দুর্নীতি প্রিয় আমির হোসেনও নিজের অবৈধ সম্পদ রক্ষা করতে নানান কৌশল হাতে নিয়েছেন। ষড়যন্ত্রকারী আখ্যা দিয়ে ইনফ্রার চেয়ারম্যান ইমরান চৌধুরী ,অধ্যক্ষ ও বেশ কিছু শিক্ষকদের ঘায়েল করতে অস্ত্র হিসেবে মিডিয়া ও বেশকিছু রাজনীতিবিদদের দরজায় ঘুরছেন।

জানা যায়, ২০০৩ সালে বরিশাল ইনফ্রা পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউট ৬জন শেয়ার মালিক নিয়ে শুরু করলেও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমির হোসেন’র কুট চক্রান্তে ৪জন শেয়ার মালিক ছিটকে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলার চেষ্টা করলে অপর শেয়ার হোল্ডার ইমরান চৌধুরীকে চেয়ারম্যান পদে কাঠের পুতুল সাজিয়ে রাখা হয়। ধাপে ধাপে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী বৃদ্ধির মাধ্যমে আয় বাড়লে নগরীর স্থায়ী ক্যাম্পাস করতে গিয়ে দুর্নীতির আশ্রয় নেয় আমির হোসেন। প্রতিষ্ঠানের নামে জমির দলিল না করে নিজের নামে জমির দলিল করে রেখেছেন। তিনটি প্লটের ৮০ শতাংশ জমি ও তিনটি বহুতল ভবনের মালিক এখন তিনি নিজে। এই জমি ও ভবন দেখিয়ে বেশ কয়েকটি ব্যাংক থেকে কোটি কোটি টাকা লোন নিয়ে আমির হোসেন ও তার স্ত্রীর নামে বরিশাল শহরে বহুতল ভবন, প্লট ক্রয় করেছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে ঐ প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন হলেও বোর্ড নির্ধারিত পরীক্ষার ফি জনপ্রতি ৮০০ টাকা সেখানে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে প্রহণ করা হচ্ছে ১৮০০ টাকা। এভাবে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এছাড়া ভর্তি ফি সহ নানাবিধ অতিরিক্ত ফি গ্রহণ করা হচ্ছে। একাদিক ছাত্র শিক্ষক জানিয়েছেন,যেসব ট্রেডে কারিগরি শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে সেসব ট্রেডে কোন মেশিন বা যন্ত্রপাতি নেই। ফলে অদক্ষ হয়ে বের হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের অন্য এক পরিচালক জনাব মোঃ ইমরান চৌধুরীর নিকট জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান আমি সবসময় শিক্ষার্থীদের পক্ষে এবং বোর্ড নির্ধারিত ফি গ্রহণের পক্ষে।

কিন্তু পরিচালক জনাব আমীর হোসেন অতিরিক্ত ফি গ্রহণ করতে অধ্যক্ষকে বাধ্য করে। এদিকে করোনাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের বেতন মৌকুফ না করলেও ৯০জন শিক্ষক-কর্মকর্তা কর্মচারীর বেতন বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এতে করে মানবেতর জীবন যাপন সহ্য করতে না পেরে একাদিকবার চেয়ারম্যান ও অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন একদিক শিক্ষক। চেয়ারম্যান ইমরান চৌধুরী ও অধ্যক্ষ। এম এ রহিম বেতন দেওয়ার অনুমতি দিলেও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমির হোসেন আবেদনে সাক্ষর না করায় কেউ বেতন পাচ্ছেন না।

এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের নিকট ফোন করে তথ্য জেনে নিতে পারেন। পরবর্তীতে অধ্যক্ষ জনাব এম.এ.রহিমকে ফোন করলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি আরো জানান,অধ্যক্ষ হিসেবে ক্ষমতা যাতে ব্যবহার না করতে পারি ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমির হোসেন আমাকে ৫ বছর যাবৎ ভারপ্রাপ্ত করে রেখেছেন। প্রতিষ্ঠানের যে কাগুজে আমার সাক্ষর থাকার কথা সেখানে আমির হোসেন সাক্ষর দিচ্ছেন। আমাদের সবাইকে পুতুল সাজিয়ে যা মনে চাচ্ছে তা করছেন। প্রতিষ্ঠানটিকে দেউলিয়া করে আমির হোসেন নিজে শত কোটি টাকার মালিক হচ্ছেন। এর জবাবে ইনফ্রা পলিটেকনিক’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমির হোসেন এ প্রতিবেদককে জানান, এসব আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। এর বাইরে আমি আর কিছু বলতে চাচ্ছি না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর