সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:১৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট
বরিশালের নতুন জেলা প্রশাসক খায়রুল আলম সুমন বরিশালের নতুন বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান র‌্যাঙ্কিংয়ে এগোতে ক্যারিবীয় সিরিজে বাংলাদেশকে যা করতে হবে জুলাই সনদ স্বাক্ষরের আগে ভাঙচুর-আগুন, ৯০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা ‘জুলাই সনদে স্বাক্ষরকারীরা গণঅভ্যুত্থান ও জনগণ থেকে ছিটকে গেছে’ জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন যেসব নেতা জুলাই সনদ স্বাক্ষর করলেন প্রধান উপদেষ্টা ও রাজনৈতিক নেতারা জুলাই সনদের দিকনির্দেশনা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকে পরিচালনা করবে : আলী রীয়াজ গণঅভ্যুত্থানের ফসল ‘জুলাই সনদ’, নবজন্মের পথে বাংলাদেশ : ড. ইউনূস ক্যান্সার দূরে রাখার ৬ উপায়

শিক্ষানবিশ আইনজীবী রেজা হত্যা : মামলা তুলে নিতে হুমকির অভিযোগ

রিপোর্টারের নাম / ২৫৪ টাইম ভিউ
হালনাগাদ : শুক্রবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২১

বরিশালে শিক্ষানবিশ আইনজীবী রেজাউল করিম রেজা হত্যা মামলা তুলে নিতে বাদী ও নিহতের বাবা মো. ইউনুস মুন্সিকে হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মামলা না তুলে নিলে রেজার মতো তার ছোট ছেলে আজিজুল করিমকেও ‌‘করুণ পরিণতি’ বরণ করতে হবে বলে শাসিয়েছে হুমকিদাতারা। অব্যাহত হুমকির মুখে বাড়ির বাইরে বেরোতে সাহস পাচ্ছেন না ইউনুস মুন্সি। তার ছোট ছেলে আজিজুল করিমও কর্মস্থলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে নিহত রেজার স্ত্রীসহ পরিবারের কয়েকজন সদস্য বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি) কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খানের সঙ্গে দেখা করে হুমকির বিষয়টি জানিয়ে নিরাপত্তা চেয়েছেন।

ইউনুস মুন্সির অভিযোগ, রেজা নিহতের ঘটনায় গত ৫ জানুয়ারি হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মহিউদ্দিন ও অজ্ঞাত আরও দুই পুলিশ সদস্যকে আসামি করে বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করা হয়। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন।

তিনি বলেন, এরপর গতকাল (৬ জানুয়ারি) দুপুরে ওষুধ আনার জন্য বাইরে গেলে একটি মোটরসাইকেল থাকা মাস্ক পরা দুই ব্যক্তি তার পথরোধ করেন। তারা হুমকি দেন, ‘আপনার দুই ছেলে। এক ছেলেকে তো হারিয়েছেন। মামলা নিয়ে বেশি নাড়াচাড়া করলে ছোট ছেলের ক্ষতি হতে পারে। ছেলেকে বাঁচাতে চান নাকি আইনি পথে এগোতে চান?’

এ সময় সেখানে লোকজন জড়ো হলে ওই দুই ব্যক্তি চলে যান।

ইউনুস মুন্সি জানান, হুমকিদাতাদের তিনি চিনতে পারেননি। তাদের পরনে সাদা পোশাক ছিল।

তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশে নির্যাতনে রেজার মৃত্যু হয়েছে। সেই ঘটনা পুলিশই তদন্ত করছে।’

তাই ছেলে হত্যার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিয়ে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেন।

রেজাউলের স্ত্রী মারুফা বেগম জানান, মামলা দায়েরের পর থেকেই তাদের বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। সর্বশেষ মোটরসাইকেল আরোহীদের হুমকির পর পরিবার ও স্বজনদের নিয়ে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এমনকি বাইরে যেতেও ভয় পাচ্ছেন।

মারুফা বলেন, ‘আমার শ্বশুর তার বড় সন্তানকে হারিয়েছেন। আরেক ছেলেকে হারানোর ভয় পাচ্ছেন। হুমকির কারণে তিনি রেজা হত্যা মামলা থেকে সরে আসার কথা ভাবছেন। এ অবস্থায় আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খানের অফিসে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করে হুমকির বিষয়টি জানিয়ে নিরাপত্তা চেয়েছি।’

এ বিষয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান জানান, ‘হাজতি রেজাউল করিমের মৃত্যুর ঘটনা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের কমিটি কাজ করছে। পাশাপাশি অভিযুক্ত এসআই মহিউদ্দিনকে গত ৪ জানুয়ারি মহানগর ডিবি থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঘটনার পর রেজার পরিবারের নিরাপত্তায় বাড়ির সামনে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। নিরপেক্ষ তদন্ত ও পরিবারটির নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর সাগরদী হামিদ খান সড়কের বাড়ি সংলগ্ন একটি চায়ের দোকানে বসা ছিলেন রেজাউল। রাত সাড়ে ৮টার দিকে মহানগর এসআই মহিউদ্দিন সেখান থেকে তাকে ধরে নিয়ে যান। পরে এসআই মহিউদ্দিন জানান, রেজাউলের কাছ থেকে ১৩৮ গ্রাম গাঁজা এবং ৪টি নেশাজাতীয় ইনজেকশন উদ্ধারের অভিযোগে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করেন এসআই মহিউদ্দিন। ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে পরদিন শুক্রবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

পরিবারের অভিযোগ, শুক্রবার আদালতের সোপর্দের সময় রেজাউল গুরুতর অসুস্থ ছিলেন। তিনি স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছিলেন না। আদালতের নির্দেশে তাকে প্রথমে কারা হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে শের-ই-বাংলা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ৫ মিনিটে মৃত্যু হয় রেজাউলের।

নিহত রেজাউল বরিশাল আইন কলেজ থেকে দুই বছর আগে এলএলবি (পাস) ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর