বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:১৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট
বরিশালের নতুন জেলা প্রশাসক খায়রুল আলম সুমন বরিশালের নতুন বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান র‌্যাঙ্কিংয়ে এগোতে ক্যারিবীয় সিরিজে বাংলাদেশকে যা করতে হবে জুলাই সনদ স্বাক্ষরের আগে ভাঙচুর-আগুন, ৯০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা ‘জুলাই সনদে স্বাক্ষরকারীরা গণঅভ্যুত্থান ও জনগণ থেকে ছিটকে গেছে’ জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন যেসব নেতা জুলাই সনদ স্বাক্ষর করলেন প্রধান উপদেষ্টা ও রাজনৈতিক নেতারা জুলাই সনদের দিকনির্দেশনা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকে পরিচালনা করবে : আলী রীয়াজ গণঅভ্যুত্থানের ফসল ‘জুলাই সনদ’, নবজন্মের পথে বাংলাদেশ : ড. ইউনূস ক্যান্সার দূরে রাখার ৬ উপায়

খাবারের ব্যাগ নিয়ে ক্ষুধার্ত মানুষ খুঁজে ফেরা এক নারী

রিপোর্টারের নাম / ২২০ টাইম ভিউ
হালনাগাদ : সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২০

দিনাজপুরের হিলির প্রত্যন্ত এলাকায় হতদরিদ্র ক্ষুধার্ত মানুষকে খাবার বিলিয়ে দিচ্ছিলেন এক নারী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেলো তিনি কোনো রাজনীতিক নন, সমাজ সেবকও নন, একান্তই ব্যক্তিগত ইচ্ছায় তার এই খাবার বিতরণ।

এই নারী একজন সরকারি চাকরিজীবী। প্রতি শুক্রবার সকাল হলেই নিজ হাতে রান্না করে বেরিয়ে পড়েন ক্ষুধার্ত মানুষের সন্ধানে। হাতে খাবারের ব্যাগ, ব্যাগে থাকে ১৮ থেকে ২০টি খাবারের প্যাকেট। প্রতি প্যাকেটে থাকে কখনও মাংস দিয়ে খিচুড়ি আর সবজি, আবার কখনও থাকে ডিম, সবজি।

রাস্তায় খাবার নিয়ে চলার সময়, যখন দেখেন কোন অসহায় বৃদ্ধ মহিলা বা পুরুষ ভিক্ষা করছেন কিংবা দিনমজুর মাঠে কাজ করছেন। হয়তো সকালে বাড়ি থেকে না খেয়েই বের হয়েছেন তারা। তাদের ডেকে তিনি বলেন, চাচী-চাচা সকালে খাওয়া হয়েছে কি? ক্ষুধার্ত জানলে তাদের কাছে ডেকে ব্যাগ থেকে খাবারের প্যাকেট বের করে তাদের হাতে সযত্নে তুলে দেন তিনি।

অন্ধ বৃদ্ধা নারীসহ তিনজন বৃদ্ধার সঙ্গে কথা হয়, তাদের হাতে খাবারের প্যাকেট। একজন বললেন, সকাল থেকে এখনও কিছু খাইনি বাবা, মানুষের বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করছি। এই বোরখা পড়া মা এসে আমাদের খাবার দিলো, আল্লাহ এই মায়ের অনেক ভাল করবেন।

অন্ধ বৃদ্ধাও বললেন- আমার তো আর চোখ নাই, তাকে দেখতে পাচ্ছি না। দোয়া করি ওই মায়ের অনেক ভাল হবে।

মানুষের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করে মজিবর। তিনি জানালেন, সকালে কাজের খোঁজে হিলি শহরে আসছি, এখন সকাল ১০ টা বাজে। এখনও কোন কাজ পাইনি, মনে হয় আজ আর কাজ পাওয়া যাবে না। কাজ না করলে বাড়িতে ছোল-পোল নিয়ে কি খাবো? এমন ভাবতে ভাবতে আসছি। পথে একজন মহিলা আমার সব কথা শুনে দুই প্যাকেট খাবার দিলো। আজ কাজ নাই, দুই প্যাকেট খাবার পেলাম, তা দিয়ে দুপুর বেলায় সবার খাওয়া হবে।

ওই নারীর কাছে গেলেও তিনি কথা বলতে চাননি। পরিচয়ও দিতে চাননি। বলেন, আমি একজন সাধারণ সরকারি চাকরিজীবী। ছোট থেকে আমার ইচ্ছে ক্ষুধার্ত মানুষকে মুখে নিজের হালাল উপার্জন দিয়ে যতটুকু পারি তাদের খাওয়াবো। প্রতি শুক্রবার বাসায় আমি ভাল-মন্দ খাবার তৈরি করি। বেশ কিছু দিন থেকে নিজেদের জন্য আর ভাল খাবার তৈরি করি না। ওই টাকা দিয়ে ১৫ থেকে ২০ জনের খাবার তৈরি করি। অসহায় ক্ষুধার্ত মানুষ খুঁজে তাদের হাতে খাবার তুলে দেই।

তিনি বলেন, মানব সেবাই বড় ধর্ম, মানুষের মাঝে লুকিয়ে আছে সৃষ্টিকর্তা। আমি ছোট মানুষ, বড় কিছু দেবার সাধ্য আমার নেই। যতটুকু দিতে পারছি তা দিয়েই নিজে তৃপ্তি নিচ্ছি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর