ক্ষুধার সূচকে ভারত পাকিস্তান থেকে এগিয়ে বাংলাদেশ
অপুষ্টির হার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে এক বছরের ব্যবধানে বড় অগ্রগতি হয়েছে বাংলাদেশের। ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট শুক্রবার চলতি বছরের যে ‘বিশ্ব ক্ষুধা সূচক ২০২০’ (গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স ২০২০) প্রকাশ করেছে, তাতে ১০৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান উঠে এসেছে ৭৫তম অবস্থানে।
গতবছর এই সূচকে ১১৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৮৮তম। অর্থাৎ এক বছরে ১৩ ধাপ অগ্রগতি হয়েছে বাংলাদেশের। আগের তিন বছর বাংলাদেশের অবস্থান ছিল যথাক্রমে ৮৬, ৮৮ ও ৯০ নম্বরে। চার মাপকাঠিতে এই সূচকটি নির্ধারণ করা হয়। অপুষ্টির হার, ৫ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে উচ্চতার তুলনায় কম ওজনের শিশুর হার, ৫ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে কম উচ্চতার শিশুর হার, ৫ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার- এই চারটি মাপকাঠিতে প্রতিটি দেশের পরিস্থিতি বিচার করে তৈরি হয় এই সূচক। গত এক বছরে বাংলাদেশ স্কোরের দিক দিয়েও অনেকটা উন্নতি করতে পেরেছে। মোট স্কোর গতবারের ২৫ দশমিক ৮ থেকে কমে হয়েছে ২০ দশমিক ৪। প্রতিটি দেশের স্কোর হিসাব করা হয়েছে ১০০ পয়েন্টের ভিত্তিতে। সূচকে শূন্যের যত কাছাকাছি যাওয়া যাবে সেদেশে ক্ষুধার সমস্যা তত কমেছে বলে ধরা হয়। স্কোর কমা মানে, সেই দেশের খাদ্য ও পুষ্টি পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।
ক্ষুধা সূচকের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ১৩ শতাংশ অপুষ্টির শিকার যা গত বছর ছিল ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ৯ দশমিক ৮ শতাংশের উচ্চতার তুলনায় ওজন কম যা গতবছর ছিল ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ। ওই বয়সী শিশুদের ২৮ শতাংশ শিশুর উচ্চতা বয়সের অনুপাতে কম যা গত বছর ছিল ৩৬ দশমিক ২ শতাংশ এবং পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার কমে হয়েছে ৩ শতাংশ যা গতবছর ছিল ৩ দশমিক ২ শতাংশ। এই সূচকে প্রতিবেশী দেশ ভারত (৯৪তম), পাকিস্তান (৮৮তম) ও আফগানিস্তানের (৯৯তম) চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে। তবে নেপাল (৭৩) ও শ্রীলঙ্কার (৬৪) চেয়ে পিছিয়ে আছে।
প্রতিবেদনে স্কোরের ভিত্তিতে চারটি ভাগে দেশগুলোকে ভাগ করা হয়েছে। স্কোর দশের নিচে দেশগুলোকে নিম্ন ঝুঁকি, ১০ থেকে ২০ এর মধ্যে মধ্যম মানের, ২০ থেকে ৩৫ এর মধ্যে দেশগুলোকে গুরুতর এবং ৩৫ থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকা দেশগুলোকে উদ্বেগজনক বলা হয়েছে। সে হিসাবে বাংলাদেশ (২০.৪) এখনও গুরুতর অবস্থানের প্রান্ত সীমায় রয়েছে। গত কয়েকবছর ধরেই এই মানে দেখানো হচ্ছে। প্রতিবেদনে এই মানে রয়েছে বাংলাদেশসহ ৪০টি দেশ। আর ক্ষুধা সমস্যায় উদ্বেগজনক পর্যায়ে রয়েছে ১১টি দেশ। এগুলোর মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান, ইথিওপিয়া, সিয়েরালিয়নসহ আফ্রিকার সাদ।