বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৩৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট
বরিশালের নতুন জেলা প্রশাসক খায়রুল আলম সুমন বরিশালের নতুন বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান র‌্যাঙ্কিংয়ে এগোতে ক্যারিবীয় সিরিজে বাংলাদেশকে যা করতে হবে জুলাই সনদ স্বাক্ষরের আগে ভাঙচুর-আগুন, ৯০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা ‘জুলাই সনদে স্বাক্ষরকারীরা গণঅভ্যুত্থান ও জনগণ থেকে ছিটকে গেছে’ জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন যেসব নেতা জুলাই সনদ স্বাক্ষর করলেন প্রধান উপদেষ্টা ও রাজনৈতিক নেতারা জুলাই সনদের দিকনির্দেশনা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকে পরিচালনা করবে : আলী রীয়াজ গণঅভ্যুত্থানের ফসল ‘জুলাই সনদ’, নবজন্মের পথে বাংলাদেশ : ড. ইউনূস ক্যান্সার দূরে রাখার ৬ উপায়

মৃত্যুর ১২ বছরেও পেনশন পায়নি এক পুলিশ কর্মকর্তার পরিবার

রিপোর্টারের নাম / ১৫৯ টাইম ভিউ
হালনাগাদ : সোমবার, ৫ অক্টোবর, ২০২০

মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সাবেক সহকারী পুলিশ সুপার যতীন্দ্রনাথ পোদ্দারের মৃত্যুর পর ১২ বছর পার হলেও এখনও মেলেনি পেনশনের টাকাসহ কোনো সুযোগ সুবিধা। এ সংক্রান্ত মামলায় করে অনুকূল রায় পেয়েও যতীন্দ্রনাথ পোদ্দারের স্ত্রী মমতা রানী পোদ্দার চেষ্টা করেও শেষ নামাতে পারেননি। দিশেহারা হয়ে অনেকটা হাল ছেড়ে দিয়েছেন মমতা রানী।

যতীন্দ্রনাথ পোদ্দার গোপালগঞ্জ জেলার সদরের বাসিন্দা। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ শেষে ১৯৭২ সালের ৫ জুলাই বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে এসআই পদে যোগদান করেন যতীন্দ্রনাথ পোদ্দার।

১৯৯০ সালের ২৯ এপ্রিল পদোন্নতি পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে চুয়াডাঙ্গা জেলায় কর্মরত হন। মূলত এরপরই সাতক্ষীরা শহরের দক্ষিণ পলাশপোল এলাকায় কেনা চৌধুরী রোড়ের ১২০ নম্বর বাড়িতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন তিনি ও তার পরিবার।

এসব কথা জানিয়ে যতীন্দ্রনাথ পোদ্দারের স্ত্রী মমতা রানী পোদ্দার জানান, চাকরিকালীন স্বামীকে বিভিন্ন সময় ‘গোপালগঞ্জের লোক ও হিন্দু’ হিসেবে অনেক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। এক পর্যায়ে ২০০৬ সালের ২ মার্চ চাকরির বয়সসীমা ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ার তিন বছর আগে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। দীর্ঘ চাকরি জীবনে তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের লঘুদন্ড বা কারাদণ্ডে অভিযোগ ছিল না। সুনামের সঙ্গে দায়িত্বপালন করেছেন।

তিনি জানান, যতীন্দ্রনাথ তাকে অবসরে পাঠানোর বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের কাছে দেনদরবার করেও কোনো সুফল না পেয়ে খুলনায় প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করেন। মামলা নম্বর-৬/২০০৬। ট্রাইব্যুনাল তার পক্ষে ২০০৭ সালের ২২ নভেম্বর মামলার রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে উল্লেখ করা হয়, অবসরে পাঠানো আইনসম্মত হয়নি। তাকে চাকরিতে পুনর্বহাল ও বিধি মোতাবেক তার চাকরির সমস্ত সুযোগ সুবিধা প্রদান করতে হবে। প্রতিহিংসামূলকভাবে তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে। যা যুক্তিযুক্ত ও আইনসঙ্গত ছিল না।

এরই মধ্যে ২০০৮ সালের ১৬ আগস্ট যতীন্দ্রনাথ পোদ্দার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। সরকার প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের ওই রায়ের বিপক্ষে আপিল করেন। যার নম্বর ০৯/০৮।

প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল ওই আপিল খারিজ করে পূর্বের রায় বহাল রাখেন। এদিকে, পুনরায় সরকারপক্ষ সুপ্রীম কোর্টে লিভ টু আপিল করেন। যার নম্বর ১১৬৩/১২। সেটিও ২০১৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টে খারিজ হয়ে যায়। ফলে প্রথম রায়টির আদেশ বহাল থাকে।

এসব ঘটনা উল্লেখ করে যতীন্দ্রনাথের স্ত্রী মমতা রানী মৃত স্বামীর চাকরির পেনশনসহ সুযোগ সুবিধার দাবি নিয়ে বিভিন্ন সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপিসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিতভাবে আবেদন করেন। তবে আজও মেলেনি কোনো সদুত্তর।

মমতা রানী পোদ্দার জানান, স্বামীর মৃত্যুর ১২ বছর পার হলেও স্বামীর ওয়ারিশ হিসেবে পেনশনের টাকাসহ কোনো সুযোগ সুবিধা পাইনি। বিভিন্ন সময় বিভিন্নজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেও ফল মেলেনি। স্বামীহারা হয়ে বেকার দুই ছেলেকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমি সরকারের কাছে ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে স্বামীর চাকরিকালীন বেতনভাতা, পেনশনসহ ও সরকারি কর্মচারির স্ত্রী হিসেবে প্রাপ্য আর্থিক সুবিধা দেয়ার দাবি করছি।

যতীন্ত্রনাথ পোদ্দারের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে যতীনময় পোদ্দার, ছোট ছেলে জগনময় পোদ্দার ও মেয়ে মিত রানী পোদ্দার।

ছোট ছেলে জগনময় পোদ্দার বলেন, ২০১৮ সালে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের পেনশন শাখায় আবেদন করেছিলাম। তবে আজও কোনো উত্তর পাইনি। আমাদের ডাকাও হয়নি সেখানে। আমরা একটি সমাধান চাই।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর