বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০১:২০ অপরাহ্ন

সবাই মিলে উপযুক্ত কাজের ব্যবস্থা করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

রিপোর্টারের নাম / ১৭৬ টাইম ভিউ
হালনাগাদ : বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই, ২০২০

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনা (কোভিড-১৯) মহামারি মোকাবিলায় এখনই সব দেশ, আন্তর্জাতিক সংস্থা, নাগরিক সমাজ ও বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণে সারা বিশ্বে একটি জোরালো ও সমন্বিত সাড়া প্রয়োজন। যেখানে জি-৭, জি-২০, ওইসিডি (অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক করপোরেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) ও আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলোর সহায়তায় এই সংকট উত্তরণে সব ব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। স্বতন্ত্রভাবে সবার জন্য উপযুক্ত কাজের ব্যবস্থা করা অত্যন্ত কঠিন, কিন্তু আমরা সবাই একত্রে এটি করতে পারি।

বুধবার (৮ জুলাই) ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) আয়োজিত ‘গ্লোবাল লিডারস ডে’ ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে দেয়া ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন। করোনাভাইরাস মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের সংকট উত্তরণের জন্য তিনটি প্রস্তাবও দেন তিনি।

করোনার থাবায় ক্ষতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, এই বৈশ্বিক দুর্যোগ বছরের পর বছর ধরে গড়ে ওঠা আমাদের বিশ্বায়ন ও কানেক্টিভিটিকে হুমকিতে ফেলেছে। করোনা মহামারি এখন কেবল স্বাস্থ্য সমস্যা নয়, বরং এটি এখন পূর্ণাঙ্গ বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংকটে রূপ নিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, এই মহামারিতে আমাদের অভ্যন্তরীণ এবং বৈশ্বিক সরবরাহ চেইন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। আমরা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের রফতানি আদেশ হারিয়েছি, আমাদের অনেক শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে, লাখ লাখ শ্রমিক তাদের চাকরি হারিয়েছে। আমাদের ক্ষুদ্র শিল্পগুলো তার বেশিরভাগ সম্পদ ও বাজার হারিয়েছে সর্বোপরি সরবরাহ চেইন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ায় আমাদের কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

চলমান করোনা সংকটে শ্রমিক সমস্যাগুলো উত্তরণে তিনটি প্রস্তাব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেগুলো হলো- এই সংকটের সময় বিদেশের বাজারে অভিবাসী শ্রমিকদের চাকরি বহাল রাখতে হবে, যদি অব্যাহতি দিতেই হয় তবে শ্রমিকদের সুরক্ষা, স্বাস্থ্য সুবিধাসহ ক্ষতিপূরণ ও অন্যান্য বরখাস্ত সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে এবং মহামারির পরে অর্থনীতিকে সক্রিয় করতে এই কর্মীদের পুনরায় নিয়োগ দিতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, করোনা মহামারি বিভিন্ন দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। বিশেষ করে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শ্রমিকরা। আমাদের বিপুলসংখ্যক অভিবাসী শ্রমিক চাকরি হারিয়েছে। ফলে রেমিট্যান্সে ঘাটতি পড়ছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে রেমিট্যান্স আমাদের মূল উপাদান। বর্তমানে বিপুলসংখ্যক বেকার অভিবাসী শ্রমিকের প্রত্যাবর্তন একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। বিশ্বব্যাংক ভবিষ্যদ্বাণী করেছে, আমরা ২০ শতাংশের বেশি রেমিট্যান্স আয় হারাবো।

করোনায় বাংলাদেশ সরকারের নেয়া কিছু পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি সংকট শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে প্রণোদনা হিসেবে অর্থনৈতিক ও সমাজের বিভিন্ন খাতের মানুষকে সহযোগিতা করতে ১২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করি। এই সহায়তা প্যাকেজ আমাদের জিডিপির ৩ দশমিক ৭ শতাংশের সমান। রফতানি শিল্পের শ্রমিকদের মজুরি দিতে ১ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেয়া হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারিতে বেকার হওয়া ৫০ মিলিয়নের বেশি মানুষকে সরাসরি নগদ ও অন্যান্য সুবিধা দেয়া হয়েছে।

বিশ্ব নেতাদের মধ্যে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মেরকেল, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে ইন, শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সাবেক সেনাপ্রধান প্রায়ুথ চান-ওচা, সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন লোফভেন ও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তা প্রদান করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর