রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:২৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট
বরিশালের নতুন জেলা প্রশাসক খায়রুল আলম সুমন বরিশালের নতুন বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান র‌্যাঙ্কিংয়ে এগোতে ক্যারিবীয় সিরিজে বাংলাদেশকে যা করতে হবে জুলাই সনদ স্বাক্ষরের আগে ভাঙচুর-আগুন, ৯০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা ‘জুলাই সনদে স্বাক্ষরকারীরা গণঅভ্যুত্থান ও জনগণ থেকে ছিটকে গেছে’ জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন যেসব নেতা জুলাই সনদ স্বাক্ষর করলেন প্রধান উপদেষ্টা ও রাজনৈতিক নেতারা জুলাই সনদের দিকনির্দেশনা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকে পরিচালনা করবে : আলী রীয়াজ গণঅভ্যুত্থানের ফসল ‘জুলাই সনদ’, নবজন্মের পথে বাংলাদেশ : ড. ইউনূস ক্যান্সার দূরে রাখার ৬ উপায়

বরিশালে মাদরাসাছাত্রীকে হত্যার পর ইট বেঁধে ডুবিয়ে দেয়া হলো খালে

রিপোর্টারের নাম / ১৭৫ টাইম ভিউ
হালনাগাদ : বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই, ২০২০

বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের আউয়ার এলাকায় যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় আয়েশা আক্তার (১২) নামে এক মাদরাসাছাত্রীকে হত্যার পর মরদেহে ইট বেঁধে খালের পানিতে ডুবিয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একই পরিবারের চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।

বুধবার (৮ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আউয়ার খাল থেকে ইট ও সিমেন্টের স্লাব বাধা অবস্থায় আয়েশার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা।

নিহত আয়েশা সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের আউয়ার এলাকার মো. দুলালের বেপরীর মেয়ে। সে আউয়ার দাখিল মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

আটকরা হলেন- একই এলাকার মো. সিদ্দিক মীর, তার স্ত্রী হনুফা বেগম, ছেলে সাব্বির মীর (১৭) ও ছোট ছেলে সাঈদ মীর (১৫)

স্থানীয়রা জানান, সিদ্দিক মীর ও আয়েশাদের বাড়ি পাশাপাশি। সিদ্দিক মীরের বড় ছেলে সাব্বির বিভিন্ন সময় আয়েশাকে উত্ত্যক্ত করতো। আয়েশাকে দেখলে আশালীন কথা বলতো সাব্বির। মাঝে মধ্যে আয়েশার শরীরে হাত দিতো। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে আয়েশাকে যৌন হয়রানি করে আসছিল সাব্বির। আয়েশা লজ্জায় এসব কথা কাউকে বলতো না। গতকাল মঙ্গলবার (৭ জুলাই) দুপুরে আয়েশা নিখোঁজ হয়। আয়েশাকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে তার বাবা-মা বিষয়টি থানা পুলিশকে জানান। বুধবার সকালে এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পরিবারসহ সিদ্দিক মীরকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আউয়ার খাল থেকে আয়েশার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ধারণা করা হচ্ছে- মঙ্গলবার সকালে সিদ্দিক মীরের বড় ছেলে সাব্বির আয়েশাকে ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টা করে। আয়েশা প্রতিবাদ করলে তাকে হত্যা করা হয়। পরে হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য সিদ্দিক মীরের পরিবারের সদস্যরা মিলে আয়েশার মরদেহে ডুবিয়ে দিতে ইট ও গলায় সিমেন্ট জমাট বাধা বালতি ও পায়ে সিমেন্টের স্লাব বেঁধে আউয়ার খালে ফেলে দেন।

বরিশাল রিভার ফায়ার স্টেশনের লিডার মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, সন্ধ্যা নদীর শাখা আউয়ার খালটি খরস্রোতা হওয়ায় তল্লাশি চালাতে ডুবুরিদের বেগ পেতে হয়েছে। প্রায় তিন ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আয়েশার মরদেহ পাওয়া যায়। তবে মরদেহে ইট ও গলায় সিমেন্ট জমাট বাঁধা বালতি ও পায়ে সিমেন্টের স্লাব বাধা থাকায় ওপরে তুলতে ডুবুরিদের বারবার চেষ্টা করতে হয়েছে।

বানারীপাড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল বলেন, আয়েশা নিখোঁজের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ সদস্যরা আউয়ার এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। এছাড়া আয়েশার মা পুলিশকে জানান মেয়েকে খুঁজতে গিয়ে তার পায়ের একটি স্যান্ডেল সিদ্দিক মীরের বাড়িতে পড়ে থাকতে দেখেছেন। এসব বিষয় জেনে সিদ্দিক মীরের পরিবারকে থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে পুলিশের জেরার মুখে আয়েশাকে হত্যা করে মরদেহ খালে ফেলে দেয়ার কথা স্বীকার করে পরিবারটি। তবে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে কি-না তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

বরিশালের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. নাঈমুল হক বলেন, সিদ্দিক মীরের ছেলে সাব্বির আয়েশাকে পানিতে চুবিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। আর ছেলে সাব্বিরকে রক্ষা করতে সিদ্দিক মীর আয়েশার মরদেহ ইট, গলায় সিমেন্ট জমাট বাঁধা বালতি ও পায়ে সিমেন্টের স্লাব বেঁধে আউয়ার খালে ফেলে দেয়।

তিনি বলেন, আয়েশাকে হত্যার কারণ জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। তারা হত্যার কারণ সম্পর্কে বিভিন্ন কথা বলছে। হত্যার আগে আয়েশা ধর্ষণের শিকার হয়েছিল কি-না সে বিষয়ে এখনই কিছু বলা ঠিক হবে না। তবে মরদেহ ও বিভিন্ন আলামত দেখে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিতভাবে বলা যাবে। আয়েশার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর জন্য প্রক্রিয়া চলছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর