বরিশালে পরিসংখ্যান অফিসে ছাত্রলীগের হামলা-ভাংচুর
শামীম আহমেদ :: বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসে কতিপয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে। মঙ্গলবার দুপুরে হামলাকারীরা পরিসংখ্যান কর্মকর্তার কার্যালয়ে তালা দিয়ে চেইনম্যান শামসুজ্জামানকে আটক করে রাখেন। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাধবী রায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে তালা খুলে আটক শামসুজ্জামানকে উদ্ধার করেন। থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
জানা গেছে, সরকারীভাবে জনশুমারির জন্য উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসের মাধ্যমে বাকেরগঞ্জ উপজেলায় তিনশ’ কর্মী নিয়োগের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক গত ৩ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে আবেদনকারীদের সাক্ষাতকার নেয়া হয়। মঙ্গলবার নিয়োগ প্রাপ্তদের তালিকা উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসের দেয়ালে লাগিয়ে দেয়া হয়।
পরিসংখ্যান কর্মকর্তার কার্যালয়ের চেইনম্যান শামসুজ্জামান জানান, মঙ্গলবার দুপুর ১২ টার দিকে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ডাকুয়া, সহ সভাপতি আলকাস হোসেন, দেলোয়ার হোসেন ও সোহেলের নেতৃত্বে ১৫/২০ জন ছাত্রলীগ কর্মীরা উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসের সামনে গিয়ে কর্মকর্তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এসময় তিনি (চেইনম্যান শামসুজ্জামান) অফিসের সামনে পৌঁছলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তার কাছ থেকে অফিসের চাবি ছিনিয়ে নিয়ে বন্ধ অফিসের তালা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে দেয়ালে সাটানো জনশুমারির নিয়োগপ্রাপ্তদের নামের তালিকা ছিড়ে ফেলে দেয়। হামলাকারীরা রুম থেকে বের হয়ে চেইনম্যান শামসুজ্জামানকে রুমে ঢুকিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাধবী রায় সাংবাদিকদের জানান, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে তালা ভেঙ্গে আটক করে রাখা চেইনম্যান শামসুজ্জামানকে উদ্ধার করেছেন। তিনি আরও জানান, পরিসংখ্যান অফিসে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চেইনম্যান সামসুজ্জামান আরও বলেন, হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মেয়র লোকমান হোসেন ডাকুয়ার কাছে জিজ্ঞাসা না করে কেন জনশুমারি গণনার জন্য লোকবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে এজন্য গালিগালাজ করতে করতে ভাংচুর করে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ডাকুয়া হামলা সাথে জড়িত নেই দাবি করে বলেন, যতোদূর শুনেছি তাতে উপজেলা নিবার্হী অফিসার মাধবী রায় ও পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মুহাম্মাদ গোলাম মোস্তফা অর্থের বিনিময়ে বিএনপি-জামায়াতের লোকজনকে নিয়োগ দিয়েছেন। স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে জামায়াতের লোকজন নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি মানতে না পেরে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কয়েকজন আবেদনকারীরা হামলা চালিয়েছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান শামসুল আলম চুন্নু পরিসংখ্যান অফিসে হামলা ও ভাংচুরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, জনশুমারি গণনার জন্য কতোজন লোক এবং কিভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে সে বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
বাকেরগঞ্জ থানার ওসি মোঃ আবুল কালাম বলেন, পরিসংখ্যান অফিসে হামলা ও ভাংচুরের খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।