ভোলা, পটুয়াখালী ও বরগুনা সহ বিভিন্ন জেলার শিক্ষক নিয়োগ হাইকোর্টে স্থগিত
পটুয়াখালী, ময়মনসিংহ, নোয়াখালী, মাদারীপুর ও সিরাজগঞ্জসহ আরও ১৪ জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন অ্যাডভোকেট মো. আসাদ উদ্দিন।
জেলাগুলোহলো-ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, নোয়াখালী, পটুয়াখালী, মাদারীপুর, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, হবিগঞ্জ ,যশোর, সাতক্ষীরা, টাঙ্গাইল, ঠাকুরগাঁও ও বরগুনা।
একইসঙ্গে, তাদের ফলাফল ঘোষণা কেন অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি), ১৪ জেলার শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ-সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি নিয়ে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. আসাদ উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার মো. রেজাউলি করিম ও মো. আব্দুল আওয়াল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
পরে আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৩ এর (৭) বিধিতে বলা হয়েছে সরাসরি নিয়োগযোগ্য পদগুলির ৬০ শতাংশ মহিলা, ২০ শতাংশ পোষ্য এবং বাকি ২০ শতাংশ পুরুষ প্রার্থীদের দ্বারা পূরণ করতে হবে।
কিন্তু সেই নিয়ম না মানায় ১৯ জানুয়ারি নিয়োগ বঞ্চিত আফরিন যুথী, নাজমুন নাহার কাকলী, মুরশিদা খাতুন, মমতাজ মহল, ফারজানা খাতুন, মিতা উকিল, মিতালী রানী, ইতি রানীসহ ১৪ জেলার ৪৬ জনের পক্ষে আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদন করেন।
আইনজীবী বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগে ১৪ জেলার ঘোষিত ফলাফল ৬ মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে, তাদের ফলাফল কেন অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৫ জানুয়ারি নীলফামারী ও বরগুনার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে গত ২৪ ডিসেম্বরের নিয়োগ স্থগিত ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। একই দিন নওগাঁ ও ভোলা জেলায় শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
গত ১৪ জানুয়ারি দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে গত ২৪ ডিসেম্বর নিয়োগের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
২০১৯ সালের ৩০ জুলাই সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পরে ওই বছরের ১ থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশ থেকে ২৪ লাখ পাঁচজন প্রার্থী আবেদন করেন। প্রথম ধাপে ২৪ মে, দ্বিতীয় ধাপে ৩১ মে, তৃতীয় ধাপে ২১ জুন এবং চতুর্থ ধাপে ২৮ জুন লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
সেপ্টেম্বরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ লিখিত পরীক্ষায় ৫৫ হাজার ২৯৫ জন পাস করেন। গত ৬ অক্টোবর থেকে নিয়োগ পরীক্ষার মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয়। মাসব্যাপী সারাদেশের সব জেলায় মৌখিক পরীক্ষা আয়োজন করা হয়। এ পরীক্ষায় ৬১ জেলায় ১৮ হাজার ১৪৭ জন চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন।
১৬ ফেব্রুয়ারি নতুন শিক্ষকদের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে যোগদান করতে বলা হয়েছে। ১৭ থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি তাদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত হবে। আর ১৯ ফেব্রুয়ারি নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের পদায়নের আদেশ জারি করা হবে। এরই মধ্যে হাইকোর্ট এ বিষয়ে রুল জারি করেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষায় ১৮ হাজার ১৪৭ জন প্রার্থীকে বাছাই করে ফলাফল প্রকাশিত হয়।