ত্রিশালের ধলা আশ্রয় কেন্দ্রে খাদ্য সরবরাহে অনিয়ম
খায়রুল আলম রফিকঃ আকারে মোটা তার উপর বস্তায় পোকা ভর্তি নিম্নমানের চাল। রংটাও কালচে। অভিযোগ, সেই চালই দেওয়া হচ্ছে ত্রিশাল ধলা সরকারী আশ্রয় কেন্দ্রের শিশু কিশোরদের। শুধু চাল তাই নয় । প্রতিদিন মোটা ভাতের সাথে খাওয়ানো হয় লাউয়ের তরকারি । মাছ মাংস কপালে জুটে না তাদের । কালে ভদ্রে কেন্দ্রের শিশুদের জুটে পাঙ্গাস মাছ । অভিযোগের তীর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান , স্টোর কিপার রফিকুল ইসলাম ও ঠিকাদার আব্দুল রশিদ বাদলের দিকে । অভিযোগ, এই তিনের যোগসাজশেই চলছে অনিয়ম । অপরদিকে তীব্র শীতে এই শিশুদের নেই গরম কাপড় । রোগ- ব্যাধীতে আক্রান্ত এই শিশুরা । তাদের হাতে পায়ে ইনফেকশন বাঁধা বেঁধেছে । এ নিয়ে তিতিবিরক্ত কেন্দ্রের অসহায় শিশুরা । তারা বলছে, যে চালের ভাত দেওয়া হয়, তা খাওয়ার অযোগ্য। পোকায় খাওয়া, কাঁকরে ভর্তি চাল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভালো নেই ময়মনসিংহের ত্রিশাল ধলা সরকারী আশ্রয় কেন্দ্রের শিশু কিশোররা। দিনের পর দিন নির্যাতিত হচ্ছে তারা। প্রতিষ্ঠানটি এখন স্থানীয়দের কাছে টর্চার সেল হিসেবেই পরিচিত। ভেতরের নোংরা পরিবেশে জটিল চর্মরোগ সহ নানান রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে এসব শিশুরা।
ধলা আশ্রয় কেন্দ্রের দুর্নীতিবাজদের সার্বিক কার্যক্রম এখন ধাক্কা দিচ্ছে সরকারের মহৎ উদ্যোগ । এই চক্র সরকারের উদ্যোগ থমকে দিয়েছে । দুর্নীতিবাজদের কারনে অপুষ্টির আঁচ পুইয়েই যাচ্ছে আশ্রয় কেন্দ্রের বাচ্চারা।
ভবঘুরে বা নিরাশ্রয় ব্যক্তিদের জন্য সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে রক্ষণাবেক্ষণ, ভরণপোষন, প্রশিক্ষণ সহ নানান কর্মকান্ডের ফিরিস্তি সমাজ কল্যান অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট দেয়া আছে। ক্স্তিু এই প্রতিষ্ঠানের ভেতরের এসবের কোনটারই মিল নেই।
ধলা জমিদার বাড়িতে ১৮ একর জমির উপর নির্মিত হয়েছে সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রটি। ওই আশ্রয় কেন্দ্রে অসহায়, সুবিধাবঞ্চিত, মাদকসেবী ও ভবঘুরে পরিচয়হীন শিশু কিশোরদের বন্দিশালা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্তমানে এখানে বসবাস করছে ২৭২ জন। ওদের জন্য সরকার থেকে খাদ্য, চিকিৎসা ও কারিগরি প্রশিক্ষনসহ বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকলেও উপরোক্তদের যোগসাজশে বন্দিদের মৌলিক চাহিদা হরণ করা হচ্ছে । কারো কাছে অভিযোগ করলেও খর্গহস্তে শাসন করা হয় এদের ।
এলাকাবাসীও বলছেন, ধলা আশ্রয় কেন্দ্রের শিশু কিশোররা ভাল ভাবে খেতে পাচ্ছে না, মাসের পর মাস দরকারি জিনিসপত্র পাচ্ছে না । সবচেয়ে খারাপ লাগছে বাচ্চাগুলোর জন্য। ওরা কী খাচ্ছে, কী পড়ছে— এ সব ভেবে খুবই চিন্তায় তারা । অপুষ্ট বাচ্চাদের নিউট্রিশন ড্রিঙ্ক দেওয়াও হচ্ছে না । মাংসের পাট উঠেই গেছে তাদের কপাল থেকে । সপ্তাহে দু’দিন ওরা মাছও ঠিকঠাক পাচ্ছে না।এভাবে চলতে থাকলে ওদের বাঁচাও দায় হবে !
এব্যাপারে ত্রিশাল উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, নিন্মমানের খাবার পরিবেশন করা হয় না । তারপরও খোঁজ নেব । দুর্নীতির বিষয়টি সত্য নয় ।