বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:১৮ অপরাহ্ন

নির্যাতনের শিকার হয়েও প্রতিকার পাচ্ছেন না মফস্বলের সাংবাদিকরা

রিপোর্টারের নাম / ১০৬ টাইম ভিউ
হালনাগাদ : শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মফস্বলের অনেক সাংবাদিক হরহামেশাই নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন একশ্রেণির দুর্নীতিবাজ পুলিশ , রাজনৈতিক দলের ক্যাডার ও সন্ত্রাসীদের দ্বারা । সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার বৈরি ভূমিকার কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না নির্যাতনের শিকাররা। অনেক সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় ভীতি প্রদর্শন , একপর্যায়ে চাপের মুখে সমঝোতা করতে বাধ্য হন । কখনও আবার প্রভাবশালীদের কারণে অনেক নির্যাতনের ঘটনা সংবাদপত্রে প্রকাশ করাও হয় না ।

সংবাপত্রে প্রকাশ, পুলিশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের জেরে কক্সবাজার বাণী পত্রিকার সম্পাদক ফরিদুল মোস্তফা খানকে মাদক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। শুধু মামলা দিয়েই নয়, তার পরিবারকে নানাভাবে হয়রানি করছে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাস ও সাবেক ওসি ফারিদ উদ্দিন খন্দকার। বিনা ওয়ারেন্টে ঢাকা থেকে ধরে নিয়ে টেকনাফ থানায় তিন দিন আটকে রেখে অমানুষিক নির্যাতনের পর মিথ্যা মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খানের স্ত্রী হাসিনা আক্তার।

গত বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। হাসিনা আক্তার বলেন, তার স্বামী বিভিন্ন সময় টেকনাফ থানার ওসিসহ পুলিশ সদস্যদের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করেছেন। এ কারণে তাকে গত ২১ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মিরপুর এলাকার বাসা থেকে ধরে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। বর্তমানে ফরিদুল কারাগারে মেডিকেলে চিকিৎসাধীন আছেন। তার চোখে মরিচের গুঁড়া দিয়ে নির্যাতন করায় বর্তমানে দুটি চোখই নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ ছাড়া তার হাত-পা ভেঙে দিয়েছে পুলিশ। চিকিৎসক জানিয়েছেন তার এক চোখ একেবারে অকেজো হয়ে যেতে পারে।

হাসিনা আক্তার আরো বলেন, কক্সবাজার থাকাবস্থায় পুলিশের নানা হয়রানির বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তরে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। পাশপাশি পুলিশী হয়রানি থেকে রেহাই পেতে কক্সবাজার ছেড়ে ঢাকায় এসে থাকতেন ফরিদুল। আর এ সুযোগে টেকনাফ থানা পুলিশ তার বাড়িতে গিয়ে মোস্তফার আত্মীয়স্বজনদের হয়রানি করে। বর্তমানেও এ হয়রানি অব্যাহত আছে। ফরিদুল মোস্তফার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহর করে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের নির্যাতনের বিষয় সঠিক তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।

ইতিপূর্বেও সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ থেকে প্রকাশিত দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিন এবং অনলাইন অপরাধ সংবাদ এর সম্পাদক প্রথিতযশা সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক জেলা গোয়েন্দা সংস্থার (ডিবি পুলিশ) উপ পরিদর্শক আক্রাম হোসেনের অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়ে এখন অমানবিক জীবন যাপন করছেন । নির্যাতনের শিকার সাংবাদিক রফিক এখন পঙ্গুপ্রায় । প্রাণভয়ে ময়মনসিংহ ছেড়ে এখন আশ্রয় নিয়েছেন ঢাকায় । তার পরিবারে নেমে এসেছে ঘোর অমানিষা ।

খায়রুল আলম রফিক ময়মনসিংহের উন্নয়ন, ঘুষ, দুর্নীতি , সামাজিক, শিক্ষা , রাজনৈতিক এবং মাদক ও অপরাধ সম্পর্কিত সংবাদ প্রাধান্য দিয়ে ময়মনসিংহ প্রতিদিন পত্রিকায় প্রকাশ করতে থাকেন ।

প্রকাশিত সংবাদগুলি বস্তুনিষ্ঠ হওয়ায় যেমনি পাঠকমহলে আলোড়নের ঝড় তোলে তেমনি অপরাধী ও ঘুষ-দুর্নীতিবাাজরা যারপরনাই আক্রমণাত্বকভাবে তেলে বেগুনে ক্ষেপে ওঠে । ময়মনসিংহ প্রতিদিনে ক্রমশ: প্রকাশিত সংবাদগুলিতে বেড়িয়ে আসতে থাকে অপকর্মকারী ঘুষখোড় দুর্নীতিবাজদের থলের বিড়াল । যার প্রেক্ষিতে মড়িয়া হয়ে পড়ে তারা ।

তাদেরই একজন ময়মনসিংহে মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে সখ্যতা , মাদক বাণিজ্য এবং আটক বাণিজ্য নিয়ে ডিবির এসআই আক্রাম হোসেনের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ হয় । ২০১৮ সালে সংবাদ প্রকাশের জেড় ধরে ঐবছরের ২৯ নভেম্বর খায়রুল আলম রফিককে আটক করে এসআই আক্রাম হোসেন । আটক করার পর খায়রুল আলম রফিকের চোখ বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয় । নির্যাতনের ছবি তুলে প্রতিপক্ষের হাতেও তুলে দেন এই পুলিশ কর্মকর্তা । এসব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় । এরপর রফিককে আসামি তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় মামলা । খায়রুল আলম রফিক জানান, উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেয়ে এসে নিরাপত্তার স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী বরাবর অভিযোগ করি । পুলিশ হেডকোয়াটার্সেও আক্রামের বিরুদ্ধে অভিযোগ করি । অভিযোগটি তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের এডিশনাল এসপি আল- আমীনকে । এদিকে দীর্ঘ ৬মাস অতিবাহিত হলেও অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়নি । অপরদিকে আক্রাম হোসেন খায়রুল আলম রফিককে হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছেন ।

এদিকে দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকার জামালপুর প্রতিনিধি ও জামালপুর পল্লীকণ্ঠ প্রতিদিনের স্টাফ রিপোর্টার সাংবাদিক শেলু আকন্দের (৫২) ওপর সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে পিটিয়ে দুই পা ভেঙে দিয়েছে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে জামালপুর শহরের দেওয়ানপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শেলুকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে পরে বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকায় জাতীয় পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। স্থানীয় সাংবাদিকদের অভিযোগ, এক সাংবাদিকের ওপর হামলার মামলার সাক্ষী হওয়ায় তার ওপর এই সন্ত্রাসী হামলা।

শেলু আকন্দ জানান, প্রতিদিন সকাল ও রাতে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে শহর বাইপাস রোড দিয়ে হাঁটাহাঁটি করেন। বুধবার রাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছলে ওৎপেতে থাকা পৌর কাউন্সিলর রুনু খানের ছেলে রাকিব খান, তুষার খান, স্বজন খান ও তুহিন খানসহ ৪/৫ জন তার ওপর হামলা চালায়। তারা লোহার পাইপ দিয়ে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে দুই পা ভেঙে দেয়। এ সময় চিৎকার করলে এলাকাবাসীরা ছুটে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।

পরে তাকে জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান সাদা জানিয়েছেন, সাংবাদিকের ওপর হামলার মামলায় সাক্ষী হওয়ার ঘটনায় শেলু আকন্দের ওপর এই হামলা। এতে জড়িত পৌর কাউন্সিলর রুনু খান ও রকিবখানসহ সকলকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় জামালপুরের সকল কর্মরত সাংবাদিকরা


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর