বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:০৯ পূর্বাহ্ন

শিক্ষিত বেকারের বোঝা পরিবার ও সমাজের জন্য অনেক বেশি কষ্টের: রাষ্ট্রপতি

রিপোর্টারের নাম / ৭৫ টাইম ভিউ
হালনাগাদ : শনিবার, ৪ মার্চ, ২০২৩

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘অশিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত বেকারের চেয়ে শিক্ষিত বেকারের বোঝা পরিবার ও সমাজের জন্য অনেক বেশি কষ্টের। কারণ এরা না হয় আউল্লা, না হয় জাউল্লা। তাই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সময় এ বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।’

শুক্রবার (৩ মার্চ) বিকেলে কিশোরগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

 

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে সমাজের বাতিঘর, যা থেকে সব সময় আলো ছড়ায়, মানবিকতার বিকাশ ঘটায় এবং সমাজকে আলোর পথ দেখায়। বিশ্ববিদ্যালয় অর্জিত জ্ঞানের গুদাম ঘর নয়। এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যা থেকে জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাতাদের আবির্ভাব ঘটে, নেতৃত্বের বিকাশ ঘটে। আজ থেকে কিশোরগঞ্জে সেই বাতিঘরের যাত্রা শুরু হলো। একে লালন করতে, পৃষ্ঠপোষকতা দিতে এবং ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে ছাত্র-শিক্ষকের বাইরে স্থানীয় জনগণকেও এগিয়ে আসতে হবে।’

কিশোরগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় শুরু থেকেই গুণে-মানে সমৃদ্ধ একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘যুগের চাহিদা ও কর্মসংস্থানের সুযোগের কথা বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষা কারিকুলাম নির্ধারণ করতে হবে। বিভাগ খোলার ক্ষেত্রেও বাস্তবতা ও শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে গুরুত্ব দিতে হবে।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘শিক্ষার সঙ্গে কর্মের সংযোগ ঘটাতে হবে। দেশের বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন অনেক বিভাগ রয়েছে, যেখানে লেখাপড়া করলে হয়তো জ্ঞানার্জন সম্ভব হবে, কিন্তু কর্মসংস্থানের সুযোগ একেবারেই সীমিত। শিক্ষার্থীরাও বুঝে না বুঝে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি- এই ভাব ধরার জন্য এসব বিভাগে ভর্তি হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘মা-বাবা ও অভিভাবকরা ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অনেক কষ্টে লেখাপড়ার খরচ যোগান। কিন্তু পাস করার পর সেই গানের কলি ‘হানড্রেড পার্সেন্ট লাভ’ এর মতো ১০০ পার্সেন্ট বেকারে পরিণত হয়। অনেক সময় বাবা-মা ও পরিবারের আশা-আকাঙ্ক্ষা মেটাতে না পেরে কেউ কেউ বিপথেও পরিচালিত হয়।’

কিশোরগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জেড এম পারভেজ সাজ্জাদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস সামাদ, কিশোরগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক মো. ইমান আলী, কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আ. ন. ম মুশতাকুর রহমান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ প্রমুখ।

মূল ক্যাম্পাসে অবকাঠামো গড়ে না উঠায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি হয় কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে।

উল্লেখ্য, ইংরেজি, গণিত, হিসাববিজ্ঞান ও কম্পিউটার সায়েন্স এই চারটি বিভাগে ১২০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু হলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের। আপাতত জেলা শহরের গুরুদয়াল সরকারি কলেজের নির্মাণাধীন ১০ তলা একাডেমিক ভবনের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম তলা দুই বছরের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস হিসেবে বরাদ্দ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া, শহরের হয়বত নগর এলাকায় একটি ভবন ভাড়া নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যালয়সহ রেস্ট হাউসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর