স্বামীর মাথা কেটে ‘ছেলেধরা’ গুজব, স্ত্রীর প্রেমিকসহ আটক ৪
অনলাইন ডেস্ক : স্বামীর মাথা কেটে ‘ছেলেধরা’ বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে প্রবাসী স্ত্রীর কথিত প্রেমিকসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সৌদি প্রবাসী এই নারী তার পরকীয়া প্রেমের জন্য এমন পরিকল্পনা করেছিলেন বলে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।
অভিযুক্ত প্রবাসী নারীর নাম তানিয়া খাতুন। তার বাড়ি বাগেরহাটের মোল্লাহাট থানার গোড়ফা গ্রামে। তিনি কাঞ্চু শিকদার ওরফে কাঞ্চনের স্ত্রী।
পুলিশ বলছে, এই গ্রামের রাসেল শেখের সঙ্গে তানিয়ার পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। আর এই সম্পর্ককে পরিণতি দিতেই তিনি স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
আটক চারজন হলেন- নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন গ্রামের মো. সজীব, একই জেলার ফতুল্লার আলীগঞ্জ এলাকার মিরাজ হোসেন এবং পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার নলুয়াবাগী গ্রামের মো. কাওসার এবং রাসেল।
রোববার রাজশাহীর পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ নিজ কার্যালয়ে এই ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, পরকীয়ায় বাঁধা হওয়ায় স্বামীকে খুন করার পরিকল্পনা করেন তানিয়া। বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন রাসেল। রাজশাহীতে কাঞ্চনকে গলা কেটে হত্যার পর ‘ছেলেধরাদের’ কাজ বলে চালিয়ে দেয়ার ছক কষেন।
পরিকল্পনা মতো পাসপোর্ট করানোর নাম করে রাসেল তার তিন বন্ধুর সহায়তায় কাঞ্চনকে রাজশাহী নিয়ে আসা হয়। কিন্তু এখানে আসার পর পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
এসপি জানান, শনিবার দিবাগত রাত আটটার দিকে কাঞ্চনকে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার বাসুদেবপুর ফুলতলা বাজারে নিয়ে যান মিরাজ ও কাওসার। সেখানে কাঞ্চনের মনে সন্দেহ জাগে। তাই তখনই তিনি চিৎকার করতে করতে দৌড় দেন। এ সময় বাজারের লোকজন মিরাজ ও কাওসারকে আটক করে পুলিশে দেয়। আর এরপর সব জানতে পারে বাহিনীটি।
পুলিশ তাদের কাছ থেকে ছুরি ও চেতনানাশক ওষুধ জব্দ করেছে।
থানায় নেওয়ার পর পুলিশের জেরার মুখে আটক দুইজন জানান যে, তারা কাঞ্চনকে অচেতন করে তার মাথা কেটে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। পরে মিরাজ ও কাওসারের দেওয়া তথ্যে রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে রাসেল ও সজীবকে আটক করে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা।
পুলিশ কর্মকর্তা মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ‘কাঞ্চনকে হত্যার পরিকল্পনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে আটক চারজনের মধ্যে মুঠোফোনের ক্ষুদেবার্তায় হওয়া কথোপকথন বিষয়টি নিশ্চিত করছে।’
‘সৌদি আরব প্রবাসী তানিয়া তার স্বামীকে হত্যার জন্য ২০ হাজার টাকাও পাঠিয়েছিলেন। তবে সাধারণ মানুষের সচেতনতার কারণে কাঞ্চন প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন।’