সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী
জনগণই আওয়ামী লীগের শক্তির উৎস, এ কথা উল্লেখ করে প্রতিটি নেতাকর্মীকে সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতির পিতার খুনিরা বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে সর্বদা তৎপর আছে, অভিযোগ করে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
টানা দশম মেয়াদে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার এক দিন পর রোববার (২৫ ডিসেম্বর) গণভবনে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে সমাপনী বক্তব্যে এ আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সবার মনে রাখা উচিত, বাংলাদেশ আমাদের দেশ। আমরা দেশের স্বাধীনতা এনেছি। কিন্তু, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি এবং বঙ্গবন্ধুর খুনিরা বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে সর্বদা তৎপর আছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, ২৯ বছরে ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ এবং ২০০১ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত দুই দফায় ক্ষমতায় থাকা সরকারগুলো দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। জনগণও মর্যাদা লাভ করেছে। কারণ, ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে নির্বাচনের মাধ্যমে টানা তিনবার ক্ষমতায় আছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের একটি মাত্র সিদ্ধান্ত বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া দেশকে ভিক্ষুক জাতিতে পরিণত করেছিলেন। কিন্তু, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দেশ থেকে মঙ্গা ও দুর্ভিক্ষ চলে যায়। আজ আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি।
সরকারপ্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ জাতির পিতার হাতে গড়ে ওঠা একটি সংগঠন। বাংলাদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ সংগঠনের জন্ম হয়েছে।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দলের সভাপতি বলেন, এটা মাথায় রেখেই দলকে শক্তিশালী করতে হবে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী তার দলের বিত্তশালী ব্যক্তিদের নিজ নিজ এলাকায় দলের নিবেদিতপ্রাণ কিন্তু অসচ্ছল কর্মীদের সহায়তায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগে অনেক অসচ্ছল নেতাকর্মী আছেন, যারা পৈতৃক জমি বিক্রি করেও রাজনীতি করেন কিন্তু কখনো কিছু চাননি।
শেখ হাসিনা বলেন, আইয়ুব খান, জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়াসহ অনেকেই আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, দলে বিপুল সংখ্যক নিবেদিতপ্রাণ কর্মী থাকায় তা করতে পারেনি।
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখতে এবং উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে কঠোর সংযম বজায় রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা খুব প্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলোতে গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা দ্রুত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করছি, যা জনগণের কল্যাণ বয়ে আনবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতি জানান, এখন তার সরকারের লক্ষ্য—বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলা।
তিনি বলেন, ডিজিটাল ডিভাইস এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দেশের তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত প্রতিটি জনগোষ্ঠী একটি স্মার্ট জনগোষ্ঠীতে পরিণত হবে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, সবাই কম্পিউটার এবং অনলাইন ব্যবহারে দক্ষ হবে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও কৃষিসহ প্রতিটি খাতে স্মার্ট এবং ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করা হবে।
শুরুতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দশমবারের মতো দলীয় সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।