শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:২৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট
বরিশালের নতুন জেলা প্রশাসক খায়রুল আলম সুমন বরিশালের নতুন বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান র‌্যাঙ্কিংয়ে এগোতে ক্যারিবীয় সিরিজে বাংলাদেশকে যা করতে হবে জুলাই সনদ স্বাক্ষরের আগে ভাঙচুর-আগুন, ৯০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা ‘জুলাই সনদে স্বাক্ষরকারীরা গণঅভ্যুত্থান ও জনগণ থেকে ছিটকে গেছে’ জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন যেসব নেতা জুলাই সনদ স্বাক্ষর করলেন প্রধান উপদেষ্টা ও রাজনৈতিক নেতারা জুলাই সনদের দিকনির্দেশনা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকে পরিচালনা করবে : আলী রীয়াজ গণঅভ্যুত্থানের ফসল ‘জুলাই সনদ’, নবজন্মের পথে বাংলাদেশ : ড. ইউনূস ক্যান্সার দূরে রাখার ৬ উপায়

পেন্ডুলামে ঝুলছে ঢাকা টেস্ট, ভারত না বাংলাদেশ- কে হাসবে শেষ হাসি?

রিপোর্টারের নাম / ১৯১ টাইম ভিউ
হালনাগাদ : রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২২

মিরাজের বলে ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করতে গিয়ে শর্ট লেগে ক‌্যাচ দিলেন বিরাট কোহলি। মুমিনুল নিচু হয়ে শুধু ক‌্যাচটাই নিলেন না, টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া জাগিয়ে তুললেন। ততক্ষণে মিরপুর শের-ই-বাংলায় হাজার পাঁচেক দর্শক ‘ভুয়া ভুয়া’ চিৎকারে মশগুল। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত জানার পরও বিরাট বিশ্বাস করতে পারছিলেন না ক‌্যাচটা নেওয়া হয়েছে।

হেঁটে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন ড্রেসিংরুমের পথে। কিন্তু আবার থমকে যায় তার দুই পা। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা কিছু হয়তো বলেছিলেন তাই পাল্টা জবাব দিতে ফিরে যান। বিরাটের সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের এ বাকযুদ্ধ নতুন নয়। পেসার রুবেল হোসেন এর সবচেয়ে বেশি ‘শিকার’। সাকিব এগিয়ে গিয়ে সেই পরিস্থিতি সামলে বিরাটকে বিদায় করেন। কিন্তু বিরাটের তখন রক্তচক্ষু!

কেন-ই বা হবেন না। ১৪৫ রানের মামুলি লক্ষ‌্য তাড়া করতে গিয়ে ভারতের রান ৪ উইকেটে ৩৭! ১৪ উইকেটের দিনে বিরাট শেষ ব‌্যাটসম‌্যান হিসেবে ফেরেন ড্রেসিংরুমে। ব‌্যাটিং ভালো না হলেও বোলিং নিয়ে ঢাকা টেস্ট জমিয়ে তুলেছে বাংলাদেশ। ৮৭ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব‌্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ করতে পারে মাত্র ২৩১ রান। তাতে ১৪৫ রানের লক্ষ‌্য পায়।

 

সেই লক্ষ‌্য তাড়া করতে নেমে ভারত দিন শেষ করেছে ৪ উইকেটে ৪৫ রানে। চতুর্থ দিনে ভারতের জয়ের জন‌্য প্রয়োজন ১০০ রান। বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো টেস্টে ভারতকে হারাতে প্রয়োজন ৬ উইকেট। ম‌্যাচটা পঞ্চম দিনে যাচ্ছে না নিশ্চিত। রোববার রোমাঞ্চকর এ লড়াইয়ে কার মুখে শেষ হাসি ফুটে সেটা দেখার।

নতুন বলে শুরুতেই সাকিবের আক্রমণে বাংলাদেশ সাফল‌্য পায়। ভারতের অধিনায়ক লোকেশ রাহুলকে উইকেটের পেছনে তালুবন্দি করান। আরেকপ্রান্তে তাইজুল বোলিংয়ে এসে সেই আক্রমণে ধার বাড়ান। তবে সাফল‌্য পাননি। মিরাজের হাত ধরেই পরবর্তীতে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। এজন‌্য কৃতিত্ব দিতে হবে উইকেটরক্ষক সোহানকে।

চেতেশ্বর পুজারা এগিয়ে খেলতে গিয়ে বল মিস করেন। অনেক নিচু হওয়া বল ধরে অসাধারণ দক্ষতায় স্টাম্পিং করেন সোহান। পরবর্তীতে গিল ডাউন দ‌্য উইকেটে গেলে সোহান পেয়ে যান দ্বিতীয় স্টাম্পিং। পড়ন্ত বিকেলে বাংলাদেশ আরেকটি উইকেটের প্রত‌্যাশায় ছিল। স্বাগতিকরা পেয়ে যান বিরাটের উইকেট। সেটাও মিরাজের দ্যুতিতে। ৮ ওভারে ৩ মেডেনে ১২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে মিরাজ ভুগিয়েছেন ভারতকে।

হাতে রান কম। তবুও জয়ের আশায় বাংলাদেশ। দিনের খেলা শেষে মিরাজ বলেছেন, ‘চতুর্থ দিন সকালে আমরা যদি দ্রুত ২ উইকেট তুলে নিতে পারি তাহলে আমরা এগিয়ে থাকব।’

 

ভারতের থেকে ৮০ রানে পিছিয়ে থেকে তৃতীয় দিন সকালে ব‌্যাটিংয়ে নেমেছিল বাংলাদেশ। লক্ষ‌্য ছিল অন্তত ২৫০ রানের লিড। কিন্তু ভারতের রান পেরুনোর আগেই স্কোরবোর্ডে নেই ৪ উইকেট।

সাতসকালে শান্ত ও মুমিনুল ড্রেসিংরুমে ফিরে যান। দুজনই থেমে যান ৫ রানে। সাকিব কিছুক্ষণ টিকে থাকার পর উইকেট উপহার দিয়ে আসেন। প্রথম ইনিংসের রিক‌্যাপ ছিল তার আউটের ধরণ। ১৩ রানে শেষ হয় তার ইনিংস। মুশফিক বের হতে পারেননি রান খরার দুষ্টচক্র থেকে। প্রথম ইনিংসে ২৬ রান করা মুশফিক এবার করেন ৯ রান।

সকালের সেশনে ৪ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ ছিল ব‌্যাকফুটে। সেখান থেকে দলকে টেনে তুলতে দরকার ছিল জুটির। জাকির-লিটনের প্রাথমিক প্রতিরোধে লড়াইয়ের আশা তৈরি হয়। জাকির একপ্রান্ত আগলে রেখে ফিফটি তুলে নেন। কিন্তু ফিফটি ছোঁয়ার পর মনোযোগ হারিয়ে জাকিরও অধিনায়ককে অনুসরণ করেন। উমেশের শর্ট বল স্কয়ার কাট করতে গিয়ে গিয়ে ডিপ থার্ডে ক‌্যাচ দেন। ৫১ রানে শেষ তার প্রতিশ্রুতিশীল ইনিংস।

 

পরের গল্পটা স্রেফ লিটনের একার। সঙ্গে সোহান ও তাসকিন তাকে সঙ্গ দিয়েছেন। তাতে ইনিংসের সর্বোচ্চ ও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি আসে সপ্তম ও অষ্টম উইকেটে। মিরাজ অক্ষরের বলে সুইপ করে শূন‌্যরানে ফেরার পর সোহান এসে আক্রমণ চালান। অশ্বিনকে ডাউন দ‌্য উইকেটে এসে ছক্কা উড়ানোর পর কভার দিয়ে অক্ষরকে চারে পাঠান। আরেকবার বিরাট কোহলির হাত ছুঁয়ে তার শট চলে যায় বাউন্ডারিতে। সপ্তম উইকেটে লিটনের সঙ্গে ৪৬ রানের জুটির ৩১ রানই করেন সোহান। এরপর স্ট‌্যাম্পড হয়ে ফিরে যান।

সেখান থেকে তাসকিন ও লিটনের ৬০ রানের জুটিতে বাংলাদেশের মান বাঁচায়। যে জুটিতে লিটনই ছিলেন মূল চালিকাশক্তি। উইকেটের চারিপাশে দারুণ সব শট খেলে ভারতীয় বোলারদের চাপে রেখেছিলেন ডানহাতি ব‌্যাটসম‌্যান। সঙ্গে তাসকিন প্রতি আক্রমণে কয়েকটি বাউন্ডারি তুলে আস্থার প্রতিদান দেন।

সেঞ্চুরির পথে লিটন এগিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু সিরাজের ম‌্যাজিকাল ডেলিভারিতে তাকে থামতে হয়। ডানহাতি পেসারের ইনসুইং ডেলিভারিতে চমকে যান ৭৩ রান করা লিটন। বোল্ড হয়ে ফিরতে হয় তাকে। এরপর তাইজুল ও খালেদ আউট হলে তাসকিনকে অপরাজিত থাকতে হয় ৩১ রানে। প্রথম ইনিংসে ২২৭ রান করা বাংলাদেশ এবার করে ৪ রান বেশি। ব‌্যাটিং এ দুর্দাশা কবে দূর হবে তা জানে কি কেউ?

হাতে পর্যাপ্ত রান নেই। তবে মিরপুরে স্বল্প পুঁজি নিয়ে লড়াই করে জয়ের রেকর্ড আছে বাংলাদেশের। ইংল‌্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াকেও এমন উইকেটে হারিয়েছেন মিরাজ, সাকিব, তাইজুলরা। এবার কি ভারতের পালা? উত্তরটা পাওয়া যাবে কালই। তবে ফল নিজেদের পক্ষে আসুক আর নাই আসুক ব‌্যাটসম‌্যানদের নিবেদনের ঘাটতির সঙ্গে স্কিলের ঘাটতি ফুটে উঠেছে প্রবলভাবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর