বরিশালে ৩ বিলাসবহুল লঞ্চকে জরিমানা
দুর্ঘটনারোধে বরিশাল নদীবন্দরে ঢাকাগামী সব লঞ্চে অভিযান চালিয়েছে নৌপরিবহন অধিদপ্তর। লঞ্চের ইঞ্জিন ও যাত্রীদের নিরাপত্তাসামগ্রী ঠিকভাবে না পাওয়ায় তিনটি বিলাসবহুল লঞ্চমালিককে ৮৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বরিশাল নদীবন্দরে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মোরাদ আলী অভিযান পরিচালনা করেন।
তিনি জানান, বরিশাল জেলা প্রশাসনের সহায়তায় বিকেলে নদীবন্দরে ঢাকাগামী সব লঞ্চে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালায়। এ সময়ে লঞ্চে মেয়াদোত্তীর্ণ অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র, সঠিকভাবে বয়া না রাখা এবং ইঞ্জিন রুমে যথাযথ নিরাপত্তাসামগ্রী না রাখায় এমভি সুন্দরবন-১১ লঞ্চকে ৪০ হাজার টাকা, পারাবাত-৭-কে ১৫ হাজার টাকা ও কুয়াকাটা-২ লঞ্চকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। লঞ্চ দুর্ঘটনা প্রতিরোধে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান সৈয়দ মোরাদ আলী।
সুগন্ধা নদীতে লঞ্চে আগুন
২৩ ডিসেম্বর রাত ৩টার দিকে ঝালকাঠির পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দেউরী এলাকায় সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে বিস্ফোরণের পর আগুন ধরে যায়। এতে ৪৫ জনের প্রাণহানির তথ্য জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
পুড়ে যাওয়া লঞ্চটিতে কত যাত্রী ছিলেন, তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বলছে, লঞ্চটিতে অন্তত ৪০০ যাত্রী ছিলেন। তবে লঞ্চ থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের অনেকের দাবি, যাত্রী ছিলেন ৮০০ থেকে এক হাজার।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন গত সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, লঞ্চটির অন্যতম মালিক হামজালাল শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়।
খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘অতিরিক্ত যাত্রী চাহিদা তৈরি করতে লঞ্চটিতে গত নভেম্বরে অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন ইঞ্জিন সংযোজন করা হয়; যাতে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানো যায়। গ্রেপ্তার মালিকের তথ্য অনুযায়ী, দেরিতে ছেড়ে আগে পৌঁছানো গেলে লঞ্চে যাত্রী বেশি পাওয়া যায়।
‘লঞ্চটির ইঞ্জিন পরিবর্তন করেছিলেন একজন সাধারণ মিস্ত্রি। যথাযথ নিয়ম মেনে এটি পরিবর্তন করা হয়নি। এ ছাড়া কোনো ট্রায়াল রান সম্পন্ন হয়নি। লঞ্চে কর্মরত তিনজন (মাস্টার ও ড্রাইভার) কর্মচারীর নৌপরিবহন অধিদপ্তরের কোনো অনুমোদন ছিল না।’
আগুন লাগা লঞ্চটিতে যাত্রীদের জন্য কোনো লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা ছিল না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শুধু তার কর্মচারীদের জন্য ২২টি লাইফ জ্যাকেট ছিল। যাত্রীদের জন্য ১২৭টি বয়া ছিল বলে গ্রেপ্তার মালিক জানিয়েছেন; তবে অধিকাংশ বয়াই যথাস্থানে ছিল না। এ ছাড়া লঞ্চটির কোনো ইন্স্যুরেন্স করা ছিল না বলে গ্রেপ্তার হামজালাল শেখ জানিয়েছেন।’
লঞ্চে আগুন লেগে প্রাণহানির ঘটনায় হামজালালসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।