সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই পীরগঞ্জে হামলা: তথ্যমন্ত্রী
সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার হীন উদ্দেশ্যে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি পীরগঞ্জে হামলা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সরকার এই অপশক্তিকে কঠোর হস্তে দমন করতে বদ্ধপরিকর বলেও আশ্বস্ত করেছেন তিনি।
সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ অবলম্বনে নির্মিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ছোটবোন শেখ রেহানা নিবেদিত এই চলচ্চিত্রের তিনটি টিজার উদ্বোধনের সময় তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার হীন উদ্দেশ্যেই সাম্প্রদায়িক অপশক্তি পীরগঞ্জে হামলা করেছে। যারা এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে, সারাদেশেই তাদের এধরণের আরো ঘটনা ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল, সেগুলো সরকারের কঠোর পদক্ষেপের কারণে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভবপর হয়েছে। সবাইকে এদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ও সতর্ক থাকতে হবে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পীরগঞ্জে রাতের অন্ধকারে বিভিন্ন বাড়িতে আগুন দেওয়া হলো। এটি খুবই স্পষ্ট যে পীরগঞ্জকে তারা এই কারণেই বেছে নিয়েছে যাতে সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়। ’
হাছান মাহমুদ জানান, সাম্প্রদায়িক হামলা ঠেকাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পাশে থাকতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আরও বহু জায়গায় এ ধরণের ঘটনা ঘটানো চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু আমাদের দলের নেতাকর্মীরা ঝাঁপিয়ে পড়ার কারণে, মানুষের পাশে থাকার কারণে সেটি করা সম্ভবপর হয়নি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে বিএনপি-জামাতসহ ধর্মান্ধ গোষ্ঠীরা বিভিন্ন সময় নানা ধরণের বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে। পদ্মাসেতু নির্মাণ, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের সময় তারা বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে এবং এই দূর্গাপূজাকে উপলক্ষ করে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়েছে। যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য, সরকারকে বেকায়দা ফেলার জন্য, এটি খুবই স্পষ্ট। সরকার কঠোর হস্তে এসব অপচেষ্টা দমন করছে, মামলা ও গ্রেপ্তার হয়েছে।’
‘চিরঞ্জীব মুজিব’ চলচ্চিত্রটি নিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী বিভিন্ন ভাষায় অনুদিত হয়েছে এবং অন্য ভাষাভাষীসহ কোটি কোটি মানুষ গ্রন্থটি পড়েছেন। কিন্তু এটি নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ হয়নি। এজন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। চলচ্চিত্রের পরিচালক নজরুল ইসলাম এবং প্রযোজক লিটন হায়দারকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। চলচ্চিত্রটি অন্যান্য দেশেও অন্যান্য ভাষায় ডাবিং করে পাঠালে বঙ্গবন্ধুর জীবন এবং কর্ম সংগ্রাম সম্পর্কে বিশ্ববাসী জানতে পারবে।’
‘চিরঞ্জীব মুজিব’ চলচ্চিত্রে বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন আহমেদ রুবেল। বেগম ফজিলাতুন নেছা রেণুর চরিত্র রূপায়ন করেছেন পূর্ণিমা এবং বঙ্গবন্ধুর বাবা ও মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন যথাক্রমে খায়রুল আলম সবুজ এবং দিলারা জামান।
চলচ্চিত্রটির পরিচালক নজরুল ইসলাম জানান, গত ২৩ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলচ্চিত্রটির ৩টি পোস্টারে স্বাক্ষরের মাধ্যমে মহরত উদ্বোধন করেন। খুব শিগগিরই দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলিতে চলচ্চিত্রটি মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
এদিন শেখ রাসেলের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষে সকালে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে শহীদ শেখ রাসেল এবং ১৫ আগস্ট শহীদদের সমাধিতে পুষ্প অর্পণ ও দোয়ায় অংশ নেন তথ্যমন্ত্রী।
দিবসটি উপলক্ষে বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর আয়োজিত আলোচনা সভায় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘শহীদ শেখ রাসেলের স্মৃতিকে ধারণ করে মেধা, মূল্যবোধ, মমত্ববোধ ও দেশপ্রেমে জাগ্রত করে শিশুদের পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।’
এসময় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স. ম. গোলাম কিবরিয়ার সভাপতিত্বে সভায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো: মুরাদ হাসান, অতিরিক্ত সচিব ফারুক আহমেদ, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ বক্তব্য রাখেন।