দেশে ১৩ মিলিয়ন ডলারের ক্লাউডবেজড ব্যবসা হচ্ছে : পলক
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ১৩ মিলিয়ন ডলারের ক্লাউডবেজড ব্যবসা হচ্ছে। আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে দেশে ক্লাউডবেজড ব্যবসার পরিধি আরও ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গ্লোবাল ফ্রিল্যান্স মার্কেটে প্রায় ১.৮ মিলিয়ন ডলারের ক্লাউড পরিষেবার সুযোগ আছে।
মঙ্গলবার (৪ মে) ভার্চুয়াল প্লাটফর্মের মাধ্যমে ফ্রি মাইক্রোসফট ক্লাউড স্কিল প্রশিক্ষণ কার্যক্রম উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং করপোরেট প্রযুক্তি লিমিটেড যৌথভাবে এটির আয়োজন করে। এই কার্যক্রমের আওতায় বাংলাদেশের পাঁচ হাজার তরুণ-তরুণী এবং আইটি প্রফেশনালদের মাইক্রোসফটের ক্লাউড স্কিলের ওপর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।
উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, যে সব দেশীয় প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের ক্লাউড সলিউশন ব্যবহার করছে তারা চাকরির ক্ষেত্রে প্রফেশনাল ভেন্ডর সার্টিফিকেট ডিমান্ড করে। ক্লাউডবেজড সার্ভিস খাতে বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১০ হাজার প্রফেশনাল কাজ করছে এবং আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে এই খাতে আরও ১০ হাজার প্রফেশনাল এক্সপার্টের কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে। ভবিষ্যতে মাইক্রোসফটের পাশাপাশি গুগল, আমাজনের মতো প্রতিষ্ঠান আমাদের জনশক্তিকে তাদের প্লাটফর্ম উপযোগী করে প্রশিক্ষিত করতে আগ্রহী হবে।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম বলেন, প্রযুক্তিভিত্তিক শিল্পায়ন এবং তার বিকাশে সরকারি ও বেসরকারিভাবে গড়ে ওঠা হাইটেক পার্ক/সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে সৃষ্ট ও সম্ভাব্য কর্মসংস্থান বিবেচনায় প্রশিক্ষিত দক্ষজনশক্তির জোগান নিশ্চিত করতে একই সমান্তরালে কাজ করে যাচ্ছে হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।
তিনি বলেন, মাইক্রোসফট ক্লাউড স্কিল ট্রেনিংয়ের উদ্দেশ্য হলো, আমাদের তরুণ প্রজন্ম যেন এখন থেকেই নতুন নতুন টেকনোলজি নিয়ে কাজ করতে পারে এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজেদের প্রস্তুত করতে পারে। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা দেশে এবং দেশের বাইরে চাকরির সুযোগ পাবে। সম্পূর্ণ বাংলায় এই মাইক্রোসফট ক্লাউড স্কিল ট্রেনিং প্রদান করবে করপোরেট প্রযুক্তি লিমিটেডের নিজস্ব মাইক্রোসফট সার্টিফাইড ট্রেনাররা।
মাইক্রোসফট বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফিফ মোহাম্মদ আলী বলেন, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং করপোরেট প্রযুক্তি লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই ‘মাইক্রোসফট ক্লাউড স্কিল’ ট্রেইনিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে মাইক্রোসফটের বিশেষায়িত প্লাটফর্মগুলো সম্পর্কে প্রশিক্ষণার্থীদের (যেমন- মাইক্রোসফট আজুরে, মাইক্রোসফট সার্ভার, মডার্ন ওয়ার্কপ্লেসের মতো বিশেষায়িত ডোমেইনগুলোতে) দক্ষতা গড়ে উঠবে। প্রশিক্ষণ শেষে উত্তীর্ণ অংশগ্রহণকারীদের মাইক্রোসফটের পক্ষ থেকে ১০০ ডলারের ক্লাউড ক্রেডিট এবং ভেন্ডর সার্টিফিকেট এক্সামে ২০ শতংশ ওয়েভার দেয়া হবে। এর বাইরে করপোরেট প্রযুক্তির পক্ষ থেকে বাছাইকৃত ৫০ জন ইন্টার্নশিপের সুযোগ পাবে।
করপোরেট প্রযুক্তির প্রধান নির্বাহী পরিচালক শফিকুল আহম্মেদ সাগর বলেন, আমাদের দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে হলে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে এবং দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে উন্নত করতে হবে। উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে আমাদের তরুণদের আধুনিক টেকনোলজি নিয়ে ধারণা দিতে হবে যেখানে ক্লাউড কম্পিউটিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাইক্রোসফট ক্লাউড স্কিল ট্রেনিং তাদের সামনে এগোনোর প্রথম সোপান হিসেবে কাজ করবে। করপোরেট প্রযুক্তি প্রশিক্ষণার্থীদের ক্যারিয়ার কাউন্সেলিংয়ের সুবিধা প্রদান করবে। যাতে করে তারা দেশে এবং বিদেশে সমানভাবে কাজ করতে পারে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ডেভেলপার রিলেশন মাইক্রোসফট এশিয়া প্যাসিফিকের ডিরেক্টর এনি ম্যাথিউ, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের পরিচালক (যুগ্মসচিব) এ এন এম সফিকুল ইসলাম, আল আরাফা ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর সৈয়দ মাসুদুল বারী, বেসিসের প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আলমাস কবীর প্রমুখ।