‘বাধ্যবাধকতা থাকায় তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন করতে পারছে না ভারত’-পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন
ভারতের সরকার বিভিন্ন বাধ্যবাধকতা থাকার কারণে তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন করতে পারছে না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
শনিবার (২৭ মার্চ) রাতে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিস্তার বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছেন। তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শুধু বলেছেন আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। এর বেশি কিছু তিনি বলেননি। আমরা সবসময় আশাবাদী, এটা হবে। তবে শুধু তিস্তা নয়, অন্যান্য যে নদীগুলো রয়েছে সেসব নদীর নাব্যতা বাড়ানোর বিষয়ে বলেছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। তিস্তার বিষয়ে তারাও চেষ্টা করছে। তারা কিছু বাধ্যকাধকতার কারণে তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন করতে পারছে না।’
আব্দুল মোমেন জানান, ‘আমরা আশ্বাসে বিশ্বাস করতে চাই। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী বর্ডারে হত্যার বন্ধে একমত। সেজন্যই বর্ডার হাট করা হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের কারণেই এসব হয় অনেক ক্ষেত্রে। সেজন্য এখন তিনটি বর্ডার হাট চালু করা হলো। তবে মাদকের কারণেও বর্ডারে অনেক সময় হত্যাকাণ্ড ঘটে। ক্রিমিনাল অ্যাক্টিভিটি, গরু চুরি, মাদক বন্ধ করতে হবে। না হলে এগুলো ঘটবেই। এক পক্ষকেই দোষ দিলে হবে না।’
নরেন্দ্র মোদির সফরে বাংলাদেশের প্রাপ্তি কী, জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘তার সফরটি আমাদের গর্বের বিষয়। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ভারত ছাড়াও অনেক দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা এসেছেন এবং অনেক দেশের সরকারপ্রধানরা আসতে পারেননি। প্রায় ৬৫ দেশের অতিথিরা আসতে পারেননি। তারা ম্যাসেজ পাঠিয়েছেন, বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যের প্রশংসা করেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী করোনার মধ্যেও সফর করেছেন। তিনি (মোদি) বলেছেন, বাংলাদেশের মধ্যে বিশেষ মমত্ববোধের কারণে তিনি এসেছেন।’
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, রোহিঙ্গাদের নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনিও (মোদি) বলেছেন তাদের ফিরে যেতে হবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্ব ৫০ বছরের বেশি। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে এবং ঢাকা-নিউ জলপাইগুড়ি মিতালি এক্সপ্রেস ট্রেনসহ কয়েকটি প্রকল্প ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করা হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে ১০৯টি অ্যাম্বুলেন্স ও ১২ লাখ করোনা টিকা উপহার দেয়া হয়েছে। শেখ হাসিনাও ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বেশ কয়েকটি উপহার দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা-নিউ জলপাইগুড়ি মিতালি এক্সপ্রেস ট্রেন সার্ভিস আজ চালু হলো। এটা যাত্রী পরিবহন করবে। ভারতবর্ষে ১৮৬২ সালে এই এলাকায় রেললাইন তৈরি হয়। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর সেটা বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন পর এটি আবার চালু হলো। হলদিবাড়ির চীলাহাটি থেকে ভূটান যেন এর সঙ্গে যুক্ত হয় সে বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সে বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হ্যাঁ সূচক মনোভাব প্রকাশ করেছেন। একটি সড়কের বিষয়ে কথা হয়েছে। সড়কটি মুজিবনগর থেকে নদীয়া যাবে, সেখান থেকে কলকাতা যাবে।’