শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:২১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট
বরিশালের নতুন জেলা প্রশাসক খায়রুল আলম সুমন বরিশালের নতুন বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান র‌্যাঙ্কিংয়ে এগোতে ক্যারিবীয় সিরিজে বাংলাদেশকে যা করতে হবে জুলাই সনদ স্বাক্ষরের আগে ভাঙচুর-আগুন, ৯০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা ‘জুলাই সনদে স্বাক্ষরকারীরা গণঅভ্যুত্থান ও জনগণ থেকে ছিটকে গেছে’ জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন যেসব নেতা জুলাই সনদ স্বাক্ষর করলেন প্রধান উপদেষ্টা ও রাজনৈতিক নেতারা জুলাই সনদের দিকনির্দেশনা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকে পরিচালনা করবে : আলী রীয়াজ গণঅভ্যুত্থানের ফসল ‘জুলাই সনদ’, নবজন্মের পথে বাংলাদেশ : ড. ইউনূস ক্যান্সার দূরে রাখার ৬ উপায়

নৌকাভাসী মানতা সম্প্রদায়

রিপোর্টারের নাম / ২৪৮ টাইম ভিউ
হালনাগাদ : সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

পটুয়াখালী প্রতিনিধি ॥ উপকূলের এক ভিন্নধর্মী জনগোষ্ঠী ‘মানতা’। জলে জন্ম, জলেই বসবাস, জলেই মুত্যু এদের। মৃত্যুর পর মরদেহ ভাসিয়ে দেয়া হয় নদী কিংবা সাগরে। আজ এ ঘাটে তো কাল অন্য ঘাটে বসবাস মানতা সম্প্রদায়ের। স্ত্রী, সন্তান, স্বামী সবাইকে নিয়ে নৌকায় বসবাস করে আসছে এ সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠী।

পটুয়াখালী জেলার রাঙাবালী উপজেলার একটি ইউনিয়ন চর-মোন্তাজ। চর-মোন্তাজের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে বাস করে মানতা সম্প্রদায়ের মানুষেরা। এছাড়াও পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা গেছে ওরা ভেসে চলে পানপট্টি, গলাচিপা, কালাইয়া, বগা, বদনাতলী, উলানিয়া, পটুয়াখালী সদরসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নদী, চর ও মোহনাগুলোতে।

জানা গেছে, এই সম্প্রদায়ের কমপক্ষে পাঁচ শতাধিক পরিবার রয়েছে পটুয়াখালীতে। সম্প্রদায়টির বেশিরভাগের রয়েছে নাগরিকত্ব পরিচয় সঙ্কট। এ সম্প্রদায়ের শিশুদের বয়স ছয়-সাত-আটে পা দিলেই জীবিকার তাগিদে হাতে তুলে নিতে হয় নৌকার বৈঠা। জাল ফেলতে হয় নদীতে। ফলে এরা বঞ্চিত হয় সাক্ষরজ্ঞান থেকে। শিক্ষা না থাকায় জীবনের পদে পদে হতে হয় বঞ্চিত-লাঞ্ছিত।

মানতা সম্প্রদায়ের লোকদের মৃত্যুর পর লাশগুলো ভাসিয়ে দেয়া হয় নদীতে। নয়তো নদীর তীরে গর্ত খুঁড়ে পুঁতে রাখা হয়। নদী কিংবা সমুদ্রের বুকে মাছ ধরার সব উপকরণ নিয়ে তারা ছুটে চলে জীবনের তাগিদে। ছোট ছোট জাল দিয়ে পোয়া, ইলিশ, পাঙ্গাস আর ছোট ছোট পোনা জাতীয় মাছ শিকার করেন তারা। চর মোন্তাজের বিস্তীর্ণ নদীতে মাছ শিকার করে সেই মাছ আবার উপকূলের বিভিন্ন ঘাটে কম দামে বিক্রি করেন। তবে তারা গভীর নদীতে মাছ শিকারে যান না। উপকূলের কাছকাছি থেকে মাছ শিকার করেন।

মানতা সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা বেড়ে ওঠে অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে। নৌকাতে জীবন কাটানোর ফলে এরা স্বাভাবিক পরিবেশ পায়না। ছোট ছোট শিশুরা ভোগে নানা অপুষ্টিজনিত বিভিন্ন রোগে। বয়স্কদের রোগ বালাই নেই বললেই চলে। নৌকাতেই গর্ভবতী নারীরা সন্তান প্রসব করেন। অনেক প্রসূতি নারীই আবার হাসপাতালে যেতে চাননা। ফলে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মায়ের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে হরহামেশাই।

মানতারা জানান, দেশের নাগরিক হয়েও কোনো নাগরিক সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন না তারা। সরকার যদি তাদের পুনর্বাসনের সুযোগ করে দিত তাহলে তারা স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেত। মানতা সম্প্রদায়ের অনেকেই জানেন না তাদের পৈত্রিক ভিটে কোথায় ছিল, আদৌও ছিল কিনা। আধুনিক সভ্যতা থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন এসব মানুষ যুগ যুগ ধরে বাস করছেন নৌকাতে।

পটুয়াখালী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান মোহন জানিয়েছেন, মানতা সম্প্রদায় চাইলে তাদের স্বাভাবিক জীবন নিশ্চিতে সব নাগরিক সুবিধা দেয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর