রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:০৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট
বরিশালের নতুন জেলা প্রশাসক খায়রুল আলম সুমন বরিশালের নতুন বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান র‌্যাঙ্কিংয়ে এগোতে ক্যারিবীয় সিরিজে বাংলাদেশকে যা করতে হবে জুলাই সনদ স্বাক্ষরের আগে ভাঙচুর-আগুন, ৯০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা ‘জুলাই সনদে স্বাক্ষরকারীরা গণঅভ্যুত্থান ও জনগণ থেকে ছিটকে গেছে’ জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন যেসব নেতা জুলাই সনদ স্বাক্ষর করলেন প্রধান উপদেষ্টা ও রাজনৈতিক নেতারা জুলাই সনদের দিকনির্দেশনা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকে পরিচালনা করবে : আলী রীয়াজ গণঅভ্যুত্থানের ফসল ‘জুলাই সনদ’, নবজন্মের পথে বাংলাদেশ : ড. ইউনূস ক্যান্সার দূরে রাখার ৬ উপায়

বরিশালে ৪৯ বছরেও ক্যান্সার আক্রান্ত জব্বার খানের মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃতি মেলেনি

রিপোর্টারের নাম / ১৫৭ টাইম ভিউ
হালনাগাদ : বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি চায় মরনব্যাধি ক্যান্সারে আক্রন্ত আব্দুল জব্বার খান ও তার পরিবার। স্বাধীনতার ৪৯ বছরে ও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি মেলেনি জব্বারের। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেছিলেন বরিশালের কাশীপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের পূর্ব বিল্ববাড়ী এলাকার মৃতঃ আবদুল করিম খানের ছেলে আব্দুল জব্বার খান।

স্বীকৃতি পেতে বছরের পর বছর ঘুরে বেড়িয়েছেন বিভিন্ন অফিস আদালতে। মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় নাম দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন লোকদের দিয়েছেন কয়েক লক্ষ টাকা। আজও স্বীকৃতি না পেয়ে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে বিছানায় কাতরাচ্ছেন তিনি। একমাত্র সন্তানের আয়ের উপর র্নিভর করে চলতে চচ্ছে তাকে। অর্থের অভাবে বন্ধ রয়েছে চিকিৎসাটুকুও।

১৯৩৭ সাথে জন্ম নেওয়া আব্দুল জব্বার খান ৮৫ বছর বয়েসে এসে হাতে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার সুবাদে পাওয়া সনদ নিয়ে প্রতিক্ষার প্রহর গুনছেন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযদ্ধে বরিশালে ৯ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন তিনি। সদ্য বিবাহিত স্ত্রী সেতারা বেগমকে রেখে যুদ্ধে চলে যান জব্বার খান।

বরিশালের বাবুগঞ্জ বোর্ড স্কুল , রায় বাড়ী ক্যাম্পে ছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধ কালীন স্মৃতি তুলে ধরে আব্দুল জব্বার খান বলেন, বয়স হয়েছে, ঠিকমত কথা বলতে পারিনা। তখন আমার কেবল বিয়ে হয়েছে। নতুন বৌকে ঘরে রেধে এক জামা কাপড়ে চলে যাই। ওই সময় ৯ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধ কমান্ডার ছিলেন, এম এ জলিল। সাব সেক্টর কমান্ডার ছিলেন ক্যাপ্টেন ওমর, যুদ্ধকালীন কমান্ডার ছিলেন জল কাদের মোল্লা। এছাড়াও আমার সথে যুদ্ধ করেছেন বাবুগঞ্জের ওহাব খান, মজিদ খান। না খেয়ে , না ঘুমিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে যুদ্ধ করেছি। আজ যারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা তারাই কেবল আনাচে কানাচে পড়ে আছে। সরকারের কাছে আবেদন করি আমি আমার মৃত্যুর আগে যেন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাই।

অসহায় আব্দুল জব্বার খানের স্ত্রী সেতারা বেগম বলেন, যুদ্ধ যখন শুরু হয়েছে তখন আমি নতুন বৌ হয়ে এই বাড়ীতে আসি। আমার স্বামী আমাকে রেখে যুদ্ধে চলে যায়। এক কাপড়ে থেকে মানুষের বাসা থেকে গম এনে সিদ্ধ করে খেয়েছি। ভাত পাইনাই। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আমার স্বামী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কোথাও গিয়ে নাম লেখায়নি। মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতির জন্য আমরা কারো কাছে যাইনি। আজ আমরা বড় অসহায়। তিনি তো যুদ্ধ করেছেন। তারতো সব কাগজও আছে তবে তিনি কেন মুক্তিযোদ্ধা হিসেকে স্বীকৃতি পাবেনা ! এখন তো তার ক্যান্সার। অর্থিক সংকটের কারনে চিকিৎসাও করাতে পারছিনা। ডাক্তার বলেছে তার ফুসফুসে ক্যন্সার। আমরা সরকারের কাছে আহব্বান জানাই যেন তিনি আমাদের সহযোগীতা করেন।

বাবা যুদ্ধ করেছেন আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এমন দাবি করে আব্দুল জব্বার খানের একমাত্র ছেলে মোঃ লিটন বলেন, আমার বাবা একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। তিনি আনচারে চাকুরী করতেন। বর্তমানে আমার বাবার বয়স প্রায় ৮৫ বছর। তিনি মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত। ২০১৭ সালে বরিশালে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইতে আমার বাবার জন্য আবেদন করি। সেখানে ‘ঘ’ শাখায় তার আবেদন আছে। আমি বিভিন্ন দপ্তরে দপ্তরে ঘুরেছি। অনেকে বাবাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে টাকাও নিয়েছে। কিন্তু কাজ করে দেয়নি। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত। আর যারা যুদ্ধ করেনি তারা ও তাদের সন্তানরা আজ মুক্তিযোদ্ধা বলে বেড়চ্ছে।

তিনি বলেন, আমি আমার পরিবার নিয়ে খুন অসহায় জীবনযাপন করছি। আমি ঢাকায় একটি সিগারেট কোম্পনীর গাড়ীর ড্রাইভার মাত্র। যা বেতন পাই তাতে নুন আনতে পানতা ফুরায়। ক্যান্সারের রোগের চিকিৎসা করানোর মতো টাকা আমার নাই। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের দাবি আমার বাবা তার মৃত্যুর পূর্বে যেন জেনে যেতে পারে সে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।

জানাগেছে, আব্দুল জব্বার খানের বাড়ী ও বিভিন্ন স্থানে থাকা সম্পত্তি ধিরে ধিরে দখল করে নিয়েছে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী মহল। তিনি ওই এলাকার একজন আওয়ামীলীগ কর্মীও ছিলেন। তবে এই অসহায় অবস্থায় পড়ে থাকা জব্বারের পাশে নেই কেউ। ছেলে চাকুরির সুবাদে ঢাকায় অবস্থান করে। বাড়ীতে একা জব্বার খান ও তার স্ত্রী সেতারা বেগম। দিনের পর দিন মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রোজগার করা শেষ সম্বল টুকুও দখল করে নেওয়ার পায়তারা চলছে। তাই সরকার ও বরিশালের উর্ধত্বন কর্মকর্তাদের সহযোগীতা কামনা করেছেন অসহায় এই পরিবারটি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর