শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:১০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট
বরিশালের নতুন জেলা প্রশাসক খায়রুল আলম সুমন বরিশালের নতুন বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান র‌্যাঙ্কিংয়ে এগোতে ক্যারিবীয় সিরিজে বাংলাদেশকে যা করতে হবে জুলাই সনদ স্বাক্ষরের আগে ভাঙচুর-আগুন, ৯০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা ‘জুলাই সনদে স্বাক্ষরকারীরা গণঅভ্যুত্থান ও জনগণ থেকে ছিটকে গেছে’ জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন যেসব নেতা জুলাই সনদ স্বাক্ষর করলেন প্রধান উপদেষ্টা ও রাজনৈতিক নেতারা জুলাই সনদের দিকনির্দেশনা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকে পরিচালনা করবে : আলী রীয়াজ গণঅভ্যুত্থানের ফসল ‘জুলাই সনদ’, নবজন্মের পথে বাংলাদেশ : ড. ইউনূস ক্যান্সার দূরে রাখার ৬ উপায়

কালের আর্বতে হারিয়ে যাচ্ছে বেত ও বেতফল

রিপোর্টারের নাম / ১৭০ টাইম ভিউ
হালনাগাদ : শনিবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২১

উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগী থেকে চিরচেনা চিত্র হলো বাড়ির পেছনের অংশে বাঁশ ঝাড়, গাবগাছসহ অযত্নে বেড়েওঠা বেতগাছ। কিন্তু এখন এর বিলুপ্তি শুরু হয়েছে। হারিয়ে যাচ্ছে বেতগাছ, সেই সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে বেতফলও।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বেতগাছে ফুল আসে অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে আর ফল পাকে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে। এটি অপ্রচলিত ফল হলেও অনেকের কাছে খুবই প্রিয়। এ ফলকে বেতফল বা বেতুন বলে। এটি যেমন পুষ্টিকর তেমন সুস্বাদু ও ঔষধিগুণ সমৃদ্ধ। মূলত মাটির অবস্থা ভেদে এই ফল খুব মিষ্টি হয়। আবার স্থান ভেদে একটু টকও হয়। বেতফল মরিচ দিয়ে চাটনি করে খেতে খুব মজাদার। বাংলা মাসের ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে বেতফল পাকে। অনেক সময় বৈশাখ মাস পর্যন্তও বেতফল থাকে। পাকা বেতফল এমনিতেই খেতে দারুণ সুস্বাদু।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. সন্তোষ কুমার বসু বলেন, ‘শীতের সময়, বিশেষ করে শীতের শুরুতে ফুল আসে এবং শীত শেষ হবার পর গরম শুরুর সময় বেত ফল পাকে থাকে। তবে আবহাওয়ার কারণে কিছুটা পরিবর্তন দেখা যেতে পারে।’

গ্রামের কৃষকের অতি প্রয়োজনীয় গাছ হিসেবে পরিচিত বেতগাছ। বেত দিয়ে বিভিন্ন হস্তশিল্প যেমন চেয়ার, টেবিল, মোড়া, ডালা, কুলা, চাঙ্গারি, ঢুষি, হাতপাখা, চালোন, টোকা, গোলা, ডোল, ডুলা, আউড়ি, চাঁচ, ধামা, পাতি, বই রাখার তাক, সোফা, দোলনা, খাট, ঝুড়ি, টেবিল ল্যাম্প, ল্যাম্পশেড ইত্যাদি তৈরি করা হয়। এটি গৃহনির্মাণ কাজেও ব্যবহার হয়। বিশেষ করে রেস্তোরাঁ বা অফিসের শৌখিন পার্টিশন হিসেবে এর ব্যাপক ব্যবহার আছে। এছাড়া লম্বা বেত ফালা করে নানা কিছু বাঁধার কাজেও ব্যবহার করা হয়। কিন্তু কালের আবর্তে মানুষ তার প্রয়োজনে ঝোপ-ঝাড়ের সংখ্যা কমিয়ে ফেলেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়েক বছর আগেও বেতাগী উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে কৃষক শ্রেণির মানুষ বেত বিক্রি করার জন্য আসতেন। একটি ২০-২২ হাত লম্বা বেত আগে বিক্রি হতো ২০ থেকে ২৫ টাকায়। কিন্তু আজ সে বেত ১৫০ টাকা দিলেও পাওয়া যাচ্ছে না।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বেত ব্যবসায়ী খালেক মিঞা বলেন, ‘আমি এই ব্যবসার সঙ্গে প্রায় ২০ বছর জড়িত। কয়েক বছর আগেও ওড়া বা ধামার চারদিক মজবুত করে গিঁট দেওয়ার জন্য বেত ব্যবহার করা হতো। আজ বেত অনেকটাই দুষ্প্রাপ্য হওয়ায় তার স্থান দখল করেছে প্লাস্টিকের দড়ি বা রশি।’

বেঁচে থাকার তাগিদে পুরোনো বেত ব্যবসায়ী অনেকেই পেশা পরিবর্তন অন্য পেশা বেছে নিয়েছে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে মানুষ বাড়ির আশপাশের ঝোপঝাড় কেটে পরিষ্কার করে সেখানে ঘরবাড়ি তৈরি করছেন। এতে যেমন প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে একটি প্রয়োজনীয় প্রজাতির লতানো গাছ, তেমনি হারাচ্ছে প্রকৃতির ভারসাম্য।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর