বরিশালে কীর্তনখোলার তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু
বরিশালের ‘হৃদপিণ্ড খ্যাত’ কীর্তনখোলা নদীর তীর দখল করে গরে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করেছে সিটি করপোরেশন। গত রবিবার থেকে শুরু হওয়া উচ্ছেদ অভিযান চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন বিসিসি কর্মকর্তারা।
এদিকে কোনো ধরনের নোটিশ এমনকি পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই উচ্ছেদ অভিযান চালানোয় ক্ষতির মুখে পড়েছেন ওইসব স্থাপনায় থাকা মজুদদার-বিভিন্ন কোম্পানির ডিলার এবং ব্যবসায়ীরা। তবে নিয়ম মেনেই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তারা।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কর্তৃপক্ষের নজরদারী না থাকায় কীর্তনখোলা নদীর দুই তীর দখলের মহোৎসব শুরু হয়েছে। তীর ঘেষে খুটি গেড়ে প্রতিনিয়ত অবৈধ দখলের পরিধি বাড়ছে। কেউ তীর দখল করে গোডাউন, কেউ কার্গো নোঙ্গর করার ঘাট আবার কেউ তীর দখল করে ইট-বালু, কয়লা-পাথরের ব্যবসা করছেন। এছাড়াও নানাভাবে দখল করা হয়েছে কীর্তনখোলা নদীর দুই তীর।
এ অবস্থায় গত রবিবার নগরীর ধান গবেষনা রোড সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীর তীর দখল করে অবৈধভাবে নির্মিত ৫টি গোডাউন ও নদী তীরের ঘাট সহ অন্যান্য স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করে বিসিসি। সোমবারও তারা উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে।
স্থানীয় জনসাধারণ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কারণে নদীর তীর উন্মুক্ত হয়েছে। এতে জনসাধারনের চলাচল এবং বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তারা নদীর তীর ঘেষে একটি বেরীবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে গোডাউন ভেঙে ফেলায় সব চেয়ে বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে ওই স্থাপনার ভাড়াটিয়া বিভিন্ন কোম্পানির ডিলার ও পরিবেশকরা। আকস্মিক উচ্ছেদের কারণে তারা পন্যগুলো নিরাপদে সরানোর সুযোগও পায়নি।
উচ্ছেদ চালাতে গিয়ে তারা বিভিন্ন কোম্পানির অনেক পন্যের ক্ষতি করেছে বলে দাবি তাদের। এ কারণে তারা গুদামজাত পন্য অন্যত্র সরানোর জন্য সময় দাবি করেছেন। অপরদিকে ওই এলাকার গোডাউন ভেঙে ফেলায় স্থানীয় ২ শতাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। তারা আহাজারী শুরু করেছেন।
আকস্মিক উচ্ছেদ অভিযানে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও স্থাপনাগুলো বিসিসি’র অনুমোদিত নকশা বর্হিভূত ছিলো বলে স্বীকার করেছেন গুদাম মালিকের ভাই ও স্থানীয় সাবেক কাউন্সিলর ফিরোজ আহমেদ।
নিয়ম নীতি মেনেই কীর্তনখোলা নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক আহমেদ। এই অভিযান চলমান থাকবে বলে তিনি জানান।
বরিশাল নদী বন্দর কর্তৃপক্ষের হিসেবে কীর্তনখোলা নদীর দুই তীরে প্রায় ৩ হাজার ২শ’ অবৈধ স্থাপনা রয়েছে।