বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:১৯ অপরাহ্ন

কাতার বিশ্বকাপের স্টেডিয়াম নির্মাণে নীলফামারীর প্রকৌশলী

রিপোর্টারের নাম / ৬৫ টাইম ভিউ
হালনাগাদ : বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২২

দরজায় কড়া নাড়ছে কাতার বিশ্বকাপ। এ উপলক্ষে মরুভূমির দেশটিতে তৈরি করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন স্টেডিয়াম। এবারের ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলের জন্য নির্বাচিত দলগুলো কাতারজুড়ে আটটি স্টেডিয়ামে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে নামবেন। স্টেডিয়ামগুলোর মধ্যে আল-রাইয়ান শহরে অবস্থিত এডুকেশন সিটি স্টেডিয়াম একটি। এই স্টেডিয়াম নির্মাণে অগ্রণী ভূমিকায় ছিলেন নীলফামারীর সৈয়দপুরের বাসিন্দা কাতার প্রবাসী ওয়াশিকুর রহমান শুভ। স্টেডিয়ামটির নির্মাণকাজে কাঠামোগত প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

মধ্য দোহা থেকে ৭ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমের শহর আল-রাইয়ান। এই শহরে অবস্থিত এডুকেশন সিটি স্টেডিয়াম। বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজনকে কেন্দ্র করে সেখানে স্টেডিয়ামটি নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার পর ভার্চুয়াল ইভেন্টের মাধ্যমে করোনার সামনের সারির কর্মীদের শ্রদ্ধা জানিয়ে ২০২০ সালে এর উদ্বোধন করা হয়। ওয়াশিকুর স্টেডিয়ামটির নির্মাণকাজে কাঠামোগত প্রকৌশলীর প্রধান দায়িত্ব পালন করেন।

প্রকৌশলী ওয়াশিকুর সৈয়দপুর উপজেলা শহরের বাঁশবাড়ি এলাকার শেখ নাজমুল হকের ছেলে। তিন ভাই-বোনের মধ্যে বড় ওয়াশিকুর। তিনি স্থানীয় রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৯২ সালে এসএসসি এবং ১৯৯৪ সালে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) থেকে কাঠামোগত প্রকৌশল বিদ্যায় স্নাতক ও স্নাতকত্তোর ডিগ্রি অর্জন করে দুবাইয়ে পাড়ি জমান। সেখান থেকে ২০১০ সালে কাতার স্টেডিয়ামের প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগদান করেন।

এর আগে তিনি যুক্তরাজ্যের এটকিস ইউকে এবং এসএনসি লাভালিন কানাডার কোম্পানিসহ আমেরিকান ও ইউরোপীয় কনসালটিং ফার্মেও কাঠামোগত ডিজাইনার হিসেবে কাজ করছেন। বর্তমানে তিনি কাতারের লুসাই সিটিতে ওয়াটার পার্ক প্রকল্পে কাজ করছেন। যা কাতার বিশ্বকাপের ফ্যান জোন হিসেবে ব্যবহার করা হবে। বিশাল হোটেল-মোটেল, সমুদ্র সৈকত, বিলাসবহুল ভিলা, শপিংমল, ওয়ার্টার পার্ক ও থিম পার্ক নিয়ে এ প্রকল্প। এখানেও তিনি হেড স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করছেন।

ওয়াশিকুরের ছোট ভাই ডা. মো. ওয়াসিম বারী জয় বলেন, ‘ভাই হিসেবে সত্যি গর্ববোধ হচ্ছে। আমরা পরিবারের সকলে এজন্য গর্বিত। বড় ভাই শুরু থেকে কাতারের সেই স্টেডিয়ামের কাজ করেছেন। শুধু ভাই বা পরিবারের কেউ হিসেবে নয়, বাংলাদেশের যারাই কেউ বিশ্বের বুকে এ রকম অবদান রাখবে তাদের নিয়ে এদেশের সবার গর্ব হওয়াটা স্বাভাবিক। আত্মীয়-স্বজন না হলেও এদেশের কেউ বিদেশের মাটিতে কোনো কিছুতে অবদান রাখলে গর্ব অনুভব করি।’

ওয়াশিকুর রহমান শুভ মোবাইল ফোনে বলেন, ‘যে স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের মতো খেলা অনুষ্ঠিত হবে, সেখানে কাজ করাটা সত্যিই সৌভাগ্যের ব্যাপার। এ জন্য নিজেকে গর্বিত মনে হচ্ছে। আমার অভিজ্ঞতা ও অর্জন বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরবো। এটা মেধাবীদের ধারণাকে উৎসাহিত করতে সহায়তা করবে।’

সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোখছেদুল মমিন বলেন, ‘এটা সত্যিই গর্বের বিষয়। আমাদের সৈয়দপুরবাসী তথা পুরো দেশের গর্ব ওয়াশিকুর। তার এ কাজ নতুন প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। আশা করি, ভবিষ্যতে তিনি বিশ্বের আরও বড় বড় স্থাপনা নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর