বরিশাল মুক্ত দিবসে সম্মাননা পেলেন ১০০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা
৮ ডিসেম্বর বরিশাল মুক্ত দিবস। দিবসটি উপলক্ষে নগরীর ওয়াপদা কলোনীর নির্যাতন কেন্দ্র ও বধ্যভূমির স্মৃতি ৭১ স্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন- সিটি করপোরেশন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ, জেলা বিভাগীয় প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠন।
বুধবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টায় প্রথমে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান বরিশাল সিটি করপোরেশন মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ, মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস।
এরপরই বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান বাদল, জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন হায়দার, পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খানসহ বিভিন্ন সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
আজ ৮ ডিসেম্বর বরিশাল মুক্ত দিবস উপলক্ষে বরিশালের ১০০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা ক্রেস্ট দেন সিটি করপোরেশন মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।
সম্মাননা অনুষ্ঠানে মেয়র বলেন, আমার সাধ্য অনুযায়ী যতটুকু সম্ভব মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা দিবো। আজ ১শ’ জনকে সন্মাননা দিলাম। ভবিষ্যতে আরও একটি আয়োজনে আবার ১ শ’ জনকে দিবো। এভাবে যতটুকু সম্ভব দিয়ে যাবো।
অনুষ্ঠানে বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ মুক্তিযোদ্ধা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
১৯৭১ সালের এ দিনে দখলদার পাক বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের ভয়ে বরিশাল শহর থেকে পালিয়ে যায়। ৭ ডিসেম্বর বিকেল ৪টা থেকে বরিশালে কারফিউ জারি করেছিল পাক হানাদার বাহিনী। কিন্তু সীমান্তে ভারতীয় মিত্র বাহিনী আক্রমণ শুরু করার পর ৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকেই পাক সেনারা বরিশাল ত্যাগের প্রস্তুতি নেয়।
বরিশাল শহর কেন্দ্রিক বিভিন্ন সড়ক পথ চারদিক থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসায় হানাদাররা নৌপথে পালাবার পরিকল্পনা করে। পরে স্টিমার, লঞ্চ, কার্গোসহ বিভিন্ন নৌযানে করে বরিশাল ত্যাগ করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। কিন্তু পাক বাহিনীর নৌযানগুলোর একাংশ চাঁদপুরের কাছে মেঘনা মোহনায় ভারতীয় মিত্রবাহিনীর বিমান হামলার কবলে পড়ে।
এ সময় তাদের কিউই জাহাজসহ গানবোট ও কার্গো ধ্বংস করা হয়। অপর অংশটি বরিশালের কদমতলা নদীতে ভারতীয় বিমানের বোমার আঘাতে ধ্বংস হয়। ফলে এসব জাহাজে থাকা সকল পাক সেনা, মিলিশিয়া, রাজাকার কমান্ডার ও দালাল নিহত হয়।
পাক বাহিনীর শহর ত্যাগের খবরে ৮ মাস ধরে অবরুদ্ধ বরিশালের মুক্তিকামী মানুষ বিজয়ের আনন্দে স্লোগান দিতে দিতে দলে দলে রাস্তায় নেমে আসে।